জয়েন্ট পরীক্ষার্থী ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ বাবার

মিল্টন পাল, মালদা: জয়েন্ট পরীক্ষার্থী ছেলের মৃত্যুর ঘটনার মাস পার হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না ইংরেজবাজার থানার পুলিশ বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় মৃত ছাত্রের বাবা প্রশাসনের দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমনকী এই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অভিযুক্তরা রীতিমতো প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে মৃত ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছিল মালদা শহরের ফুলবাড়ি সারদাপল্লী এলাকায়। বুধবার দিন ছেলের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাতে ফের ইংরেজবাজার থানায় আসেন মৃত ছাত্রের পরিবার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম শুভময় মন্ডল (১৯)। সে ললিতমোহন হাই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর এবছর জয়েন্টে পরীক্ষা দিয়েছিল। গত ১৬ অক্টোবর সকালে ওই ছাত্রের ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় রহস্যজনকভাবে এই মৃতদেহ উদ্ধার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। গলায় কাপড় জড়ানো অবস্থায় ওই ছাত্রের দেহ ঝুলছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। আর এই ঘটনার পরেই ছেলেকে আত্মহত্যার প্ররোচনা এবং ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলেছেন মৃতের বাবা দ্বীজেন মন্ডল। পাশাপাশি ভাইয়ের এই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার পিছনে চার অভিযুক্ত বিজয় গোস্বামী, রজত বরণ অধিকারী, রাজশ্রী বিপ্লব চক্রবর্তী এবং বিশ্বজিৎ গুপ্তের বিরুদ্ধে মৃত ছাত্রের এক দাদা বিশ্বজিত মন্ডল ১৬ অক্টোবর ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই পুলিশ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ।
মৃত ছাত্রের বাবা দ্বীজেন মন্ডল বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে গোলমাল চলছিল মালদা শহরের জনৈক ব্যক্তি বিজয় গোস্বামীর। তারই জেরে এই চারজন অভিযুক্তেরা নানানভাবে আমার ছেলেকে ভয় ভীতি দেখাতো।এমনকী ছেলেকে রাস্তায় পেলে তাকে র্যাগিং করত। এই ব্যাপারে ছেলে কিছুদিন ধরে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল। এরপরই গত ১৬ অক্টোবর ছেলের দেহ উদ্ধার হয় তার ঘর থেকে। দেহটি বিছানার উপর হাঁটু ভাঁজ করা অবস্থায় ছিল। গলায় দাগ ছিল। এই ঘটনার সময় আমরা বাড়িতে কেউ ছিলাম না। আমাদের ধারণা শুধু অভিযুক্তেরা আত্মহত্যার প্ররোচনা নয়, বাড়িতে ঢুকে ছেলেকে শ্বাসরোধ করে খুন করার ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: একুশে গেরুয়া শিবিরের রাশ দিল্লির হাতে, ৩৯টি সাংগঠনিক জেলার দায়িত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা
মৃত ছাত্রের বাবা দ্বীজেন মন্ডলের অভিযোগ, ‘এ ব্যাপারে বারবার পুলিশ ও প্রশাসনের দুয়ারে অভিযোগ জানিয়েছে। বিচারের আশায় বারবার ইংরেজবাজার থানায় গিয়েছি। কিন্তু পুলিশ বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে, পাল্টা আমাদের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এমনকী ফোনে হুমকি দিয়ে অভিযুক্তরা আমাদেরকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। এই অবস্থায় পুলিশের সাহায্য না পেলে মুখ্যমন্ত্রী দ্বারস্থ হব’।