
যুগশঙ্খ, ওয়েবডেস্কঃ বাতাসে বাজছে বিষাদের সুর। একের পর থামছে লড়াই। আর মুখ ভার হচ্ছে দেশবাসীর। প্রয়াত হলেন বাংলার অন্যতম সেরা ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। ক্রীড়াজগত আজ ফের একবার অভিভাবকহীন হল। গত ২২ জানুয়ারি জীবনাবসান হয় ১৯৭৫ সালের ৫-০ গোলে জেতা ডার্বি জয়ের নায়ক সুভাষ ভৌমিক। তার প্রায় একমাসের কিছু কম সময়ে চলে আরেক কিংবদন্তী। রেখে গেলেন স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে স্নিগ্ধদেবকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ১.৫৪ মিনিটে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে জীবনাবসান হয় এই বর্ষীয়ান ফুটবলারের। করোনা আক্রান্ত হন সুরজিৎ। গত ২৩ জানুয়ারি ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার জন্যই একাধিক রোগে দেহে বাসা বাঁধতে শুরু করে। গত ২৯ জানুয়ারি থেকে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা শুরু হয়েছিল।
সাতের দশকের শুরুতে খিদিরপুর ক্লাবের জার্সি গায়ে তাঁর কলকাতা ময়দানে নামা। প্রথম বড় ক্লাব মোহনবাগান হলেও, ১৯৭৪ সালে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জার্সি গায়ে চাপিয়ে নেন। এরপর টানা ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন লাল-হলুদ বাহিনীর অপরিহার্য ফুটবলার। ১৯৭৮ সালে তাঁর অধিনায়কত্বে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal Captain) যুগ্মভাবে ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন(Federation Cup) হয়েছিল। এছাড়া সেই বছর ইস্টবেঙ্গল জিতেছিল ডুরান্ড কাপ (Durand Cup) এবং বরদলুই ট্রফি। ১৯৭৫ সালে আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল ৫-০ গোলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে হারিয়ে দেয়। প্রথম গোলটা এসেছিল সুরজিতের পা থেকে। এর পাশাপাশি সেই ম্যাচে আরও দুটি গোলের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন সুরজিৎ। তবে এত বড় মাপের একজন খেলোয়াড় হওয়া সত্ত্বেও পদ্মশ্রী কিংবা অর্জুন পুরস্কার পাননি। এমনকি ২০১৭ সালে ব্যান্ডেলে তাঁর পৈতৃক বাড়ি থেকে খেলোয়াড় জীবনের সব পদক, স্মারক ও সম্মানিক চুরি হয়ে যায়। সেগুলো আর উদ্ধার হয়নি। সেই আক্ষেপ নিয়েই চলে গেলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত। শোকস্তব্ধ ফুটবল দুনিয়া।
শোকপ্রকাশ করে টুইট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও। টুইটারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “আজ আমরা হারালাম অভিজ্ঞ তারকা ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্তকে। ফুটবল ভক্তদের হার্টথ্রব এবং একজন অসামান্য জাতীয় ক্রীড়াবিদ হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন নিখুঁত ভদ্রলোক। তিনি চিরকাল আমাদের হৃদয়ে থাকবেন। গভীর সমবেদনা জানাই।”