
অভিষেক গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা: স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। এবার দলের বিরুদ্ধে আভিযোগ আনলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পারিয়াল। মঙ্গলবার সংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি না। যদি শ্রমিক সংগঠনে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতাম, তাহলে শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে শ্রমিক স্বার্থ সম্পর্কিত যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে দিতে পারতাম।’
কিছুতেই থামছে না তৃণমূল বিধায়কদের বিদ্রোহ। বিরোধের সুর ক্রমশই চড়ছে। একুশের নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে তৃণমূল বিধায়কদের অসন্তোষ ততই প্রকট হচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রীপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু আধিকারী। আর তারপর থেকেই তৃণমূলের অন্দরে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছে বিদ্রোহের আগুন।
আরও পড়ুন- মাঝেরহাট ব্রিজের নাম বদলে ‘জয় হিন্দ’, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
সোশ্যাল মিডিয়াতে চোখ রাখলেই তার নিদর্শন দেখা যাবে। বিধায়ক মিহির গোস্বামী ও শীলভদ্র দত্ত, ডায়মন্ডহারবারের বিধায়ক দীপক হালদার ও হাওড়া শিবপুর এর বিধায়ক লাহিড়ী প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের পর, স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না, এই অভিযোগে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক তথা তৃণমূলের শ্রমিক নেতা বিশ্বনাথ পারিয়াল।
দলীয় নেতৃত্বের একাংশের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘যখনই ভাল কোনও কাজ করতে যাচ্ছি, ঠিক তখনই পিছন থেকে টেনে ধরা হচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে দল সম্পর্কে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে। আর দলের নেতৃত্বের একাংশ দুর্গাপুরের সমস্ত কারখানায় শ্রমিক সমস্যাগুলিকে ইচ্ছে করে জিইয়ে রেখে দিচ্ছে। দলে থেকে এই নেতারা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দিচ্ছে। উচ্চ নেতৃত্বকে সব রিপোর্ট জমা দিয়েছি। এখন সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে সবাই। কারণ, সামনেই নির্বাচন। মাথায় রাখতে হবে সেই কথাও।’
দল সম্পর্কে বিশ্বনাথ পারিয়ালের এই মন্তব্য বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে দলের নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক বিশ্বনাথ পারিয়ালের এই চড়া সুর কি নতুন কোনও রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত? উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ছেড়ে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। ভোটে জিতে বাম-কংগ্রেস জোটের বিধায়ক হন। ২০১৭ সালের গোড়া থেকে ফের তৃণমূলের হয়ে ময়দানে নামেন।