দুর্নীতিতে যুক্ত থাকায় পদ খোয়াতে হয়েছে হালিশহর পুরসভার প্রাক্তন পৌরপ্রশাসককে: জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক

অলোক কুমার ঘোষ, ব্যারাকপুর: “আমফান দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ পাওয়ার পরেই উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা পৌরপ্রশাসক অংশুমান রায়কে তার পদ থেকে সরানো হয়েছে।” উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহর পুরসভার পৌরপ্রশাসক অংশুমান রায়ের পদত্যাগের বিষয় সাংবাদিকদের প্রকাশ্যে জানালেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতে জেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেরে বেরনোর পর মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকদের এমনটাই জানালেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
প্রসঙ্গত, মাস খানেক আগে হালিশহর পৌরসভার পৌর প্রশাসক অংশুমান রায় তার পৌর প্রশাসকের পদ ছেড়ে দেন। দুই বারের নির্বাচিত পৌরপ্রধান অংশুমান রায় সেই সময় পৌর প্রশাসকের পদ ছেড়ে দিয়ে জানান, “আমি নিজে ব্যক্তিগত কারনে পরিবারকে সময় দিতে চাই, তাই পৌরপ্রশাসকের পদ ত্যাগ করছি। আমি আমার পরিবারের সাথে একান্তে সময় কাটাতে চাই, তাই পৌরসভার সমস্ত কাজ ও পৌর প্রশাসকের পদ ছেড়ে দিচ্ছি। তবে আমি তৃণমূল দল ছাড়ছি না। দলের সঙ্গেই আছি। দলের যে কোন প্রয়োজনীয় দরকারে আমি দলের সঙ্গে থাকব, দলের নির্দেশে মেনে চলব।”
[আরও পড়ুন- কাঁকসার জঙ্গলমহলে প্রথম পালনে টিকল না করকনাথ মুরগী]
কিন্তু মঙ্গলবার রাতে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক স্পষ্ট ভাবে বলেন, “আমফান দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার উপযুক্ত প্রমাণ পেলে, হালিশহর পুরসভার পৌর প্রশাসকের যে অবস্থা হয়েছে, অন্য অভিযুক্তদের একই অবস্থা হবে।” বারাসাত জেলা শাসকের দপ্তরে এক প্রশাসনিক বৈঠকে অংশ নিতে এসে আমফান দুর্নীতি প্রসঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আমফান ঝরে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য যে সরকারি অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্তকেই তাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের অর্থ দেওয়া হয়ে গেছে। এই অর্থ নিয়ে যারা দুর্নীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে দল।”
তিনি আমফান দুর্নীতি নিয়ে বলেন, “ইতিমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল দলের ৮৭ জন পদাধিকারিকে আমফান দুর্নীতিতে জড়িত সন্দেহে শোকজ করা হয়েছে। এদের মধ্যে যেমন রয়েছে বিভিন্ন পঞ্চায়েতের সদস্য, পঞ্চায়েত প্রধান, তেমনিই রয়েছে হালিশহরের প্রাক্তন পৌরপ্রধান তথা পৌরপ্রশাসক অংশুমান রায়ও।”
খাদ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলেন “আমফান ত্রাণের অর্থ নিয়ে দুর্নীতি করার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে উঠেছে দল তার তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যে আমফান ইস্যুতে যারা সরকারের টাকা অন্যায় ভাবে নিয়েছিল তারাই চেক ও ড্রাফটের মাধ্যমে সেই টাকা সরকারের ঘরে ফিরিয়ে দিয়েছেন।ফলে আমফান দুর্নীতি ইস্যুতে কয়েক কোটি টাকা সরকারের ঘরে জমা পরেছে। আমফান দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আছে তার উপযুক্ত প্রমাণ পেলেই আমরা কঠোর পদক্ষেপ নেব। উপযুক্ত প্রমাণ পেয়ে যেমন হালিশহরের পৌরপ্রশাসক অংশুমান রায়কে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”