থেমে গেল জলতরঙ্গের মূর্চ্ছনা, প্রয়াত বিশিষ্ট সন্তুরবাদক শিবকুমার শর্মা
শিবকুমার শর্মার প্রয়াণে টুইটে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন মোদী ও মমতার

যুগশঙ্খ, ওয়েবডেস্ক: সুরের জগতে ফের ছন্দপতন। চলে গেলেন বিশিষ্ট সন্তুরবাদক শিবকুমার শর্মা। আজ সকালে মুম্বইয়ের শিল্পীর নিজ বাসভবনেই ৮৪ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে কিডনির অসুখে ভুগছিলেন তিনি। করোনার সময়ে দীর্ঘ দুবছর বাড়ি থাকতেই এই প্রবাদপ্রতীম শিল্পী। অনুষ্ঠানের জন্য মাঝেমধ্যে বাড়ি থেকে বের হতে দেখা যায়।
প্রয়াত শিল্পীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সমস্ত শিল্প জগত। শোকজ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার প্রয়াণে আমাদের সাংস্কৃতিক জগতের অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বকে ছুঁয়েছিলেন। তাঁর সৃষ্টি পরবর্তী প্রজন্মকে মুগ্ধ করবে। আমি তার পরিবারে প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। ওম শান্তি!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটে লেখেন, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার মৃত্যু পেলাম। খুব দুঃখের খবর। একজন আন্তর্জাতিক মানের শিল্পী ছিলেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা। তার প্রয়াণে শিল্প মহলের অপূরণীয় ক্ষতি। পরিবারে প্রতি গভীর সমবেদনা’।
উল্লেখ্য, ১৯৩৮ সালের ১৩ জানুয়ারি জম্মুতে এক সম্ভ্রান্ত সংগীতজ্ঞ পরিবারে জন্ম হয় শিবকুমার শর্মার। বাবার কাছেই তবলা এবং গানের তালিম নিতে শুরু করেন তিনি। মাত্র ৫ বছর বয়সেই শুরু হয়ে যায় ধ্রুপদী সঙ্গীতচর্চা। ১৩ বছর বয়সে তিনি সন্তুর শেখা শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে মুম্বইয়ে তিনি প্রথম মঞ্চে সন্তুর বাজান। ১৯৬০ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম সোলো অ্যালবাম। শিবকুমারেরর আগে ধ্রুপদী সঙ্গীতের জগতে সন্তুর বাদ্যযন্ত্রটির তেমন পরিচয় ছিল না। সেই যন্ত্রকে ধ্রুপদী সঙ্গীতের মূল ধারায় নিয়ে এসেছিলেন শিবকুমারের। হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি একের পর এক বিখ্যাত সুরসৃষ্টি করে গিয়েছেন। কাজ করেছেন বলিউডেও। তাঁর পুত্র সন্তান রাহুলও এই বাদ্যযন্ত্র চর্চা করেন। পিতার কাছেই এটির তালিম পেয়েছেন তিনি।
শান্তারামের সিনেমা ‘ঝনক ঝনক পায়েল বাজে’ এবং হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া ও বৃজভূষণ কাবরার সঙ্গে তাঁর অ্যালবাম ‘কল অব দ্য ভ্যালি’ তাঁকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছিল। এছাড়াও ‘সিলসিলা’ ছবিতে হরিপ্রসাদের সঙ্গে তাঁর যুগ্মভাবে সুরদান এখনও বলিউড সঙ্গীতের অন্যতম কীর্তি হিসাবে চিহ্নিত হয়।
পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে বহু বাণিজ্যিক সিনেমার মিউজিক কম্পোজ করেছেন। তার মধ্যে যেমন বিশেষভাবে উল্লেখ্য- ‘সিলসিলা’, ‘লমহে’, ‘চাঁদনী’র মতো একাধিক সিনেমা। যে জুটি কিনা ‘শিব-হরি’ জুটি বলেই পরিচিত।