রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নামটা তিনমাস আগে থেকেই আমাদের সিলেবাসে নেই: শমীক ভট্টাচার্য

শরণানন্দ দাস, কলকাতা: একুশের নির্বাচনের পর থেকেই বেসুরো ছিলেন। শেষমেশ ৯ মাস পর বিজেপি ছেড়ে পুরনো দলে ফিরলেন ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক ও প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বিজেপি রাজ্য দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে রাজীব সম্পর্কে দলের প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নামটা তিনমাস আগে থেকেই আমাদের সিলেবাসে নেই।’
এদিন শমীক বলেন, ‘ ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বুকে নিয়ে এসেছিলেন। নির্বাচনে লড়েছিলেন, নির্বাচিত হতে পারেননি। তারপর থেকে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন। তখন থেকেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সিলেবাসে নেই, ওঁকে নিয়ে আলোচনা নেই।’ এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলে যোগ দিয়ে বলেছেন, ‘আমি ভুল করেছিলাম। আমাকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। নানা রকম স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। আমি লজ্জিত, অনুতপ্ত।’ তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ভারতের মা’ বলেও সম্বোধন করেছেন। এ প্রসঙ্গে শমীকের কটাক্ষ ‘ রাজীব কী বলবেন আর তার প্রতিক্রিয়া দিতে হবে, এমন খারাপ অবস্থা বিজেপির হয়নি।” রাজীব বনমন্ত্রী থাকাকালীন বনসহায়ক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই বিষয়ে সরব হয়েছেন শমীক।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘বনসহায়ক পদে দশ লাখ প্রার্থীর দেড় মাসের মধ্যে ইন্টারভিউ নিয়ে নিয়োগ হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন এটা কীভাবে সম্ভব? হাওড়ার কিছু গৃহবধূ যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, যাঁদের বনে যাওয়ার কথা তাঁরা রয়েছেন কলকাতার অরণ্য ভবনে। আমরা এই নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রীও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন বিষয়টিতে দুর্নীতি হয়েছে। তিনি একটি তদন্ত কমিটিও গড়েছেন। আমরা অপেক্ষায় আছি, তদন্তের রিপোর্টে কি সত্য বেরিয়ে আসে।’ এরপরই তিনি বলেন, ‘ রাজীব আমাদের দলে যোগ দেওয়ার সময় বনসহায়ক পদের জন্য কোথা থেকে তালিকা তৈরি হয়েছিল সেইসব নথি আমাদের এক রাজ্য নেতার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। আমরা সময়মতো সেইসব তথ্য সামনে আনব।’
এদিন তিনি প্রকারান্তরে রাজীবের দলবদলের রাজনীতিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘ মুরলীধর লেনের এই দফতরে বসতেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, হরিপদ ভারতী, বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী, তপন শিকদারের মতো নেতারা। বাংলায় বিজেপি তখন সবেমাত্র পথ চলা শুরু করেছে। হরিপদ ভারতীকে রাজ্যসভার সাংসদ পদ দিতে চাওয়া হল। ইন্দিরা গান্ধী আমন্ত্রণ জানালেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর পদ দিতে চাইলেন, হরিপদ ভারতী দল ছাড়েননি। তাই বলছি বিজেপি একটি বহমান ধারা। শুধু ‘রামচরিত মানস ‘ নয়, মাঝে মাঝে ‘মেঘনাদ বধ ‘ কাব্য পড়া উচিত। নির্গুন স্বজন শ্রেয় পরঃ পরঃ সদা।’