দিনহাটায় উদ্বেগ বাড়িয়ে বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, দিনহাটা: করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চললেও বাজারে ভিড় হচ্ছে পাল্লা দিয়ে। দিনহাটা মহকুমায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৩ জন। এই আক্রান্তদের মধ্যে দিনহাটা শহরেই রয়েছে ২১ জন। বাকি ১২ জন বিভিন্ন গ্রামের বলে জানা গেছে। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলায় পাশাপাশি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তা সত্ত্বেও প্রশাসনের নির্দেশিকা অনুযায়ী চার ঘন্টার নির্দিষ্ট সময় দোকান বাজার খুলতেই ভীড় উপচে পড়ছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা আসার পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলছে পাল্লা দিয়ে।
গত কয়েকদিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলায় সাধারণ মানুষ স্বাভাবিকভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলায় অনেকেই মুখে মুখে আতঙ্কের কথা বললেও হাটবাজার কিংবা দোকানের ভিড় দেখলেই আন্দাজ করা যায় সবকিছু। অবিলম্বে বাজারে ভিড় কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণেরও দাবি উঠেছে। হাট-বাজার গুলিকে পূর্বের মতো আবারও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেন ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ অনেকেই। দিনহাটা শহরে একসাথে ২১ জন সংক্রমিত হতেই শহরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এসে দাঁড়ালো ৩১ জন। পুরসভার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে এই এলাকাগুলোকে বিশেষভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়।
সোমবার দিনহাটার চওড়াহাট বাজারে বাজার করতে আসা অনেকেই বলেন, বাজারে যেভাবে ভিড় হয়েছে তাতে সংক্রমণ আরও বেড়ে যাবে। অথচ নিজের এলাকাতে বাজারে না গিয়ে কেন চওড়াহাট কিংবা প্রত্যুষা বাজারে এসেছেন এই প্রশ্ন করতেই পাশ কাটিয়ে চলে যান তারা। কিছু মানুষ মুখে আতঙ্কের কথা বললেও তারা নিজ নিজ এলাকায় বাজার কিংবা দোকান বাদ দিয়ে দূরে এসে বাজার করছেন। এলাকায় এলাকায় দোকান থাকা সত্ত্বেও সচেতনতার অভাব রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন অনেকে। দিনহাটার চওড়াহাটে পূর্বপ্রান্তে ফলের দোকান গুলিতে এদিন গ্রাহকদের ভীড় উপচে পড়ে।
এদিন ফলের বাজারে সামাজিক দূরত্ব বলে কিছু ছিল না। বারেবারে সচেতনতা প্রচার করা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীদের অনেকের মুখেই যেমন ছিল না মাস্ক তেমনি গ্রাহকদের অনেকেই মাস্ক ছাড়াই চলে আসেন। এদিকে করোনা সংক্রমণ যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে গোষ্ঠী সংক্রমনের কথা উল্লেখ করেন অনেকে।
ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক উৎপলেন্দু রায়, কৃষ্ণেন্দু সাহা, গৌতম পাল, মদন কর্মকার, দিলীপ রায় প্রমুখ বলেন প্রশাসন যদি বাজারগুলোকে আবার বিভিন্ন রাস্তায় ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে তারা সাংগঠনিকভাবে সহযোগিতা করবেন।
দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলছে তা রোধে পুলিশ ও প্রশাসনকে আরও কড়া হতে হবে। পাশাপাশি তিনি বলেন, হাটবাজারে ভিড় কমাতে মাছ, মাংস, আনাজের দোকান কে প্রতিটি এলাকায় এলাকায় ছড়িয়ে দিতে হবে। কোনভাবেই যাতে বাজারে ভিড় না হয় তার দিকে পুলিশ ও প্রশাসনকে নজর রাখতে হবে। ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা পুলিশ প্রশাসনকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
এদিকে মহকুমা শাসক শেখ আনসার আহমেদ বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে হাট বাজারে ভিড় কমাতে প্রয়োজনে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলা হবে। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মানবেন্দ্র দাস বলেন, হাটবাজারে ভিড় কমাতে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।