তৃণমূল কংগ্রেস আগামী দিনে সাইনবোর্ডে পরিণত হবে, মন্তব্য শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কণিষ্ক পণ্ডার
একই মঞ্চে কুণাল ঘোষ ও লক্ষ্ণণ শেঠ... তুঙ্গে রাজনৈতিক জল্পনা

মিলন পণ্ডা, হলদিয়া (পূর্ব মেদিনীপুর): তৃণমূলে যোগদান করবেন হলদিয়ার দাপুটে সিপিএম নেতা ও প্রাক্তন সাংসদ লক্ষণ শেঠ। আর সেই জল্পনাও অবশ্যই জিইয়ে রাখলেন। অবশেষে শহিদ ক্ষুদিরাম বসু ১৩২ তম জন্মদিনে শুভেন্দু অধিকারী গড়ে অরাজনৈতিক একই মঞ্চে দেখা গেল লক্ষণ শেঠ ও রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে।এই নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা তুঙ্গে। তাহলে লক্ষণ শেঠ তৃণমূলে যোগদান করছেন? যদিও লক্ষ্মণ শেঠের তৃণমূলের যোগদান প্রসঙ্গ পুরোপুরি এড়িয়ে যান কুণাল ঘোষ। তিনি দাবি করছেন এটা সম্পন্ন অরাজনৈতিক মঞ্চ বলে দাবি করছেন।
বৃহস্পতিবার শহিদ ক্ষুদিরাম বসু ১৩২ তম জন্মদিন। এই নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একাধিক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অরাজনৈতিক মঞ্চে দেখা গিয়েছে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এদিন বিকালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার শিল্পনগরী হলদিয়া দূর্গাচক এলাকায় টাউন ক্লাবের মাঠে ক্ষুদিরাম বসু ১৩২ তম জন্মদিন অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয় সম্পন্ন অরাজনৈতিক ব্যানারে। উপস্থিত ছিলেন একসময়ের হলদিয়ার বেতাজ বাদশা তথা প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ ও তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। অনুষ্ঠানের মূল তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মাওনেতা মধুসূদন মন্ডল ওরফে নারায়ণ।যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে কুণাল ঘোষ ও লক্ষ্মণ শেঠ কারোর গলাতেই কোনও রাজনৈতিক দলের কথা শোনা যায়নি।এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি নেতৃত্ব।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “লক্ষ্মণদাকে চিনি বহুদিন। সাংবাদিকতা করতে গিয়ে যখন রাজ্য বিধানসভা অধিবেশন কভার করতাম ঘটনাচক্রে আমাদের প্রেস গ্যালারির যেখানে আমরা বসতাম তার ঠিক সামনে যিনি বসলেন তিনি হলেন লক্ষ্মণদা। সরকার থেকে যখন নানা নথিপত্র দিত সাংবাদিকতার স্বার্থে আগাগোড়া যিনি সহযোগিতা করে গেছেন তিনি কিন্তু লক্ষ্মণ শেঠ। বহু দিনের পরিচয়। আজকের এই মঞ্চটি অরাজনৈতিক মঞ্চ। মধুদা এবং আপনাদের সকলের উদ্যোগে ক্ষুদিরাম বসুকে স্মরণ করা হচ্ছে মধুদা সকলকে ডেকেছেন। তিনি লক্ষণদাকে ডেকেছেন আমাকে ডেকেছেন আরও যাদের দেখেছেন তারা এসেছেন। আশা করি এই রাজনৈতিক সভা নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠবে না।” তবে হলদিয়ার বেতাজ বাদশা তথা প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ তৃণমূল যোগদান প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। বলেন, ‘পৃথিবীতে সবই হতে পারে’।
এদিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতৃত্ব। তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সহ সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘নন্দীগ্রাম আন্দোলন করেই তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছিল। তৎকালীন লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিল। হলদিয়া একই মঞ্চে সাংসদ সারদা কাণ্ডে অভিযুক্ত আসামী কুণাল ঘোষ ও লক্ষ্মণ শেঠ সভা করছেন। দুজনকে একই মঞ্চে দেখা যাচ্ছে। নন্দীগ্রামের ভয়াবহ গণহত্যার ঘটে ছিল। অনেক তরতাজা যুবকের প্রাণ বলি দিতে হয়েছিল। তৃণমূল রাজনীতিভাবে দেউলিয়া। যদিও এই অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়ে রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান। এর সঙ্গে রাজনীতি কোনও সম্পর্ক নেই’।
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে এনকাউন্টারে নিহত সাইকো কিলার দিলীপ দেওল
লক্ষ্মণ শেঠ পাশে বসা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল কংগ্রেস একাংশ। শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সম্পাদক কণিষ্ক পণ্ডা বলেন, ‘লক্ষ্মণ শেঠের পাশে তৃনমূলের মুখপাএ কুণাল ঘোষ যা বললেন আগামী দিনে শুধু জেলা নয় গোটা রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সাইনবোর্ডে পরিণত হবে। নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতা এসেছিল। নন্দীগ্রামের গণহত্যার মূল কাণ্ডারি ছিল লক্ষ্ণণ শেঠ। আর তার পাশে বসে সভা করছেন তৃণমূলের উচ্চস্তরে নেতা। কণিষ্কবাবু আরও বলেন, ‘পূর্ব মেদিনীপুরে গণতন্ত্র ছিল না। শুভেন্দু অধিকারীর আন্দোলনের মাধ্যমে জেলাবাসী গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতা পেয়েছিল। নন্দীগ্রামের ওই হার্মাদ নেতার পাশে বসে সভা করছেন। হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছে। মায়ের সামনে মেয়ে ধর্ষণ, স্বামী সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ। আর সেই সব নেতাকে পাশে নিয়ে সভা করছে তৃণমূল’।