বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ফুলহার নদীর জল, শুরু ভাঙন

মিল্টন পাল, মালদা: মহানন্দার পর এবার বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ফুলহার নদীর জল। জল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। রতুয়ার বিলাই মারিগ্রাম পঞ্চায়েতের তারক টোলা, গঙ্গারাম টোলা, রুহিমারি এলাকায়। প্রায় ৫০০ মিটার এলাকাজুড়ে ফুলহার নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। ফুলহার গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে জমি। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার মানুষ জমি থেকে ফসল, গাছ কেটে সরিয়ে নিচ্ছেন। উঠছে প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ। গঙ্গা নদীও বিপদসীমা ছুঁইছুঁই। এই পরিস্থিতে বন্যার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দারা।
রতুয়ার পাশাপাশি ইংলিশ বাজার পুরো এলাকাতেও ৯ এবং ১২,১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে মহানন্দা নদীর জল। নদী তীরবর্তী এলাকায় মানুষের বাড়িতে জল ঢুকে গেছে। পার্শ্ববর্তী মাঠে আশ্রয় নিয়েছেন বালুরচর সদরঘাট সহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। তবে এখনও পুরসভা থেকে কোনরকম সাহায্য তারা পাননি বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন:অমলা শঙ্করের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
যদিও বেশ কিছুদিন আগেই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী ইংরেজবাজার পৌর এলাকার বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন। সেই সময় বর্তমান পৌরসভার প্রশাসকের বিরুদ্ধে বন্যায় প্লাবিত মানুষদের সাহায্য বা সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ করেন।
মহানন্দার জলে প্লাবিত স্বপ্না হালদার বলেন,যেভাবে মহানন্দা নদীর জল প্রতিদিন বাড়ছে তাতে আগামী দিনে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। একদিকে করোনা সংক্রমণ অন্যদিকে মহানন্দা নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় তারা কোথায় থাকবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। কারণ ইতিমধ্যেই স্কুলগুলিতে রোগীর চিকিৎসা চলছে। ফলে বাধ্য হয়ে বাঁধ সংলগ্ন খোলা মাঠে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তারা কাজ হারিয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে কোন সাহায্য করা হয়নি। এমনকি তাদের সাথে দেখাও করতে আসেনি বর্তমান প্রশাসক। যা পরিস্থিতি চলছে এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের সাহায্য চাইছি।
এদিন গঙ্গার জল স্তর ছিল ২৪.১৪। ফুল নদীর জল স্তর ২৭.৬৬। মহানন্দা ২১.৫৭। গঙ্গার জল বিপদ সীমার কাছাকাছি থাকলেও ফুল আরও মহানন্দা নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
আরও পড়ুন:কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নই: পাইলট
ফুলহার নদী সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা বিকাশ মণ্ডল বলেন, এবছর অনেক আগেই নদীতে জল বাড়তে শুরু করেছে। এর ওপর শুরু হয়েছে ভাঙন। ইতিমধ্যেই নদীসংলগ্ন প্রচুর জমি জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে।যার ফলে অনেক বসতভিটা ও চাষের জমি জলের তলায় তলিয়ে গেছে। ফলে কর্মহীন অবস্থায় তাদের দিন কাটছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তাদের কোনও সাহায্য সহযোগিতা করছে না। বন্যা ভাঙনের কাজগুলি জেলা প্রশাসন সঠিক ভাবে করত তাহলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না গ্রামবাসীদের। বর্তমানে যেভাবে জল বাড়ছে তাতে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে যাবে। সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার আশুতোষ দত্ত বলেন, ভাঙন প্রবণ এলাকাগুলিতে ভাঙন মোকাবিলার কাজ চলছে।
উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টির কারণে মহানন্দা,ফুলহার নদীর জল বেড়েছে। দুই নদীতেই বিপদসীমার ওপর দিয়ে জল বইছে। যে এলাকাগুলিতে জল ঢুকেছে ওগুলো নদী’র অসংরক্ষিত এলাকা। তবে ওই এলাকার ওপরেও আমরা বিশেষ নজর রাখছি।