বাংলায় গণতন্ত্র নেই, বিস্ফোরক দিলীপ

শরণানন্দ দাস, কলকাতা: বাংলায় স্বৈরাচারী শাসন চালাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ দিলীপ ঘোষের। শনিবার বঙ্গ বিজেপি সভাপতির অভিযোগ, ‘সারা দেশে একমাত্র বাংলাতেই গণতন্ত্র নেই। বিরোধিতা করলেই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কণ্ঠরোধ করতে হামলা আচালানো হচ্ছে। হিংসার রাজনীতি চলছে, খুনের রাজনীতি চলছে।’
বিজেপির রাজ্য দফতরে এদিন বহিরাগত ইস্যুতেও সুর চড়ান দিলীপ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘বহিরাগত বলে আওয়াজ তুলে বাঙালিদের সর্বনাশ করবেন না।’ রাজ্য বিজেপি সভাপতি মনে করিয়ে দেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৪০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করতে যান। সেখানে তাঁদের কাজের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সন্মানের সঙ্গে বাঁচার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’ মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘লকডাউনের সময় দিদি আপনিই চাননি বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরুন। এখন যদি ওইসব রাজ্যে আওয়াজ ওঠে বাঙালিরা বাইরের লোক? যদি বলা হয়, বাংলায় ফিরে যাও? আপনি পারবেন তো তাঁদের চাকরি দিতে, খাবার দিতে! দয়া করে এই নোংরা রাজনীতি বন্ধ করুন।’
মমতাকে সতর্ক করে রাজ্য বিজেপি সভাপতি আরও বলেন, ‘এরকম পরিস্থিতি তৈরি হলে বাঙালিদের সবাই সন্দেহের চোখে দেখবে। কাশ্মীরের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছিল।’ ‘বহিরাগত’ ইস্যুতে দিলীপের প্রশ্ন, ‘বাংলায় ঢুকতে ভিসা, পাসপোর্ট লাগবে নাকি? নাকি দিদিমণি ভেবেছেন বাংলাটা পশ্চিম পাকিস্তান হয়ে গিয়েছে?’
মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, ‘ওদের একজন মন্ত্রী আবার স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলেছেন। আমার প্রশ্ন যেসব বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে ফাঁসির দড়ি গলায় পরেছেন তাঁরা কি বাংলার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন? নাকি তখন বাংলার মানচিত্রটা এমন ছিল? তাঁরা বলিদান দিয়েছিলেন অখণ্ড ভারতের জন্য। ওঁরা কি গান্ধীজিকেও বাইরের লোক বলবেন? তিনি তো গুজরাটি ছিলেন।’
দিলীপ তৃণমূলের দুই প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদের প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, ‘আপনাদের দুই বিতর্কিত প্রাক্তন সাংসদ কেডি সিং অসমের লোক, আহমেদ হাসান ইমরান আদতে বাংলাদেশি। এঁরা বাইরের লোক নন! আপনজন! দিদি রাজনীতির জন্য আর কত নিচে নামবেন!’
এদিন নাম না করে প্রশান্ত কিশোরকেও নিশানা করেছেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, ‘দিদির আশেপাশে বাইরের লোক। বাইরের লোক এসে আজ দিদির পার্টি স্ট্র্যাটেজি ঠিক করছেন। লক্ষ করে দেখুন, আপনার পার্টির মধ্যেই আওয়াজ উঠেছে, বাইরের লোকের দাদাগিরি মানব না।’ রাজ্য বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘আমার একটা মন্তব্য নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে। আমি বলেছিলাম, বাংলাকে গুজরাট বানাব। এখনও বলছি। কেন বলব না? গুজরাট সারা দেশের মানুষকে অন্ন জোগাচ্ছে। সুরাটে আমাদের রাজ্যের বহু মানুষ সোনা হিরের কাজ করে কোটিপতি হয়ে গিয়েছেন। কাপড়ের কলে কত বাঙালি শ্রমিক কাজ করেন। বামপন্থীরা বাংলার মানুষকে গুজরাটজুজু দেখিয়েছিলেন। ফল হাতে নাতে পেয়েছেন। লোকসভায় একটা আসনও পাননি ওঁরা।’
সুশাসন, গণ তন্ত্রের প্রসঙ্গ তুলেও মমতাকে খোঁচা দেন দিলীপ, ‘গুজরাট নারী সুরক্ষায়, আইনশৃঙ্খলায় রক্ষায় দেশের মধ্যে এক নম্বরে। সেখানকার শাসন ব্যবস্থা গণ তন্ত্র মোতাবেক চলে। আর বাংলা নারী নির্যাতনে দেশের মধ্যে এক নম্বরে। সুতরাং বাংলা গুজরাট হলে বাংলার লাভই হবে। ’