বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সহ তিন উচ্চপদস্থ আধিকারিককে সাসপেন্ড

সৌরভ বড়াল, বীরভূম: বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সহ তিনজন উচ্চপদস্থ আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হলো বিশ্ববিদ্যালয় তরফের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির মিটিংয়ে রেজুলেশনের টেম্পারিং করার অভিযোগে একটি তদন্ত কমিটির তদন্তের ভিত্তিতে শনিবার তাদের সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম কোন প্রাক্তন উপাচার্য বিশ্বভারতীর প্রশাসনিক মহলের রোষের মুখে পড়লেন এবং সাসপেন্ড হলেন সরাসরি। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিশ্বভারতী শিক্ষা মহলে।
উক্ত সাসপেন্ড হওয়া তিনজন বিশ্বভারতীর আধিকারিক বিশ্বভারতীতে কর্মরত রয়েছেন উচ্চপদস্থ পদে। আগামী দিনে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতী কি শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেবে টা সিদ্ধান্তের জন্য তারা যাতে নিজেদের পদে আসীন থেকে কোনরকম ট্যাম্পারিং না করতে পারেন তার জন্য সেফটি ম্যাজার হিসেবে ওই তিন আধিকারিক কে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বভারতী। শনিবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত প্রশাসনিক পদ থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর নতুন করে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা যাচ্ছিল না দীর্ঘদিন ধরে। এই সময় কালে বিশ্বভারতীর কর্মরত উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বেশ কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের পদে আসীন ছিলেন।
তারমধ্যে বিশ্বভারতী প্রাক্তন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপিকা সবুজ কলি সেন। বর্তমানে তিনি বিশ্বভারতীর ফিলোজফি বিভাগের অধ্যক্ষ পদে আসীন রয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রাক্তন উপাচার্য সবুজ কলি সেনের আমলে বিশ্বভারতীর কর্মসচিব অর্থাৎ রেজিস্ট্রার পদে দায়িত্বে ছিলেন সৌগত রায়। বর্তমানে তিনি বিশ্বভারতীর ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া তৎকালীন ফিন্যান্স অফিসার সমিত রায় যিনি বর্তমানে শিক্ষা ভবনের অধ্যাপক পদে নিযুক্ত রয়েছেন। বিশ্বভারতীর এই প্রশাসনিক তিন আধিকারিক এর বিরুদ্ধে কর্মসমিতির মিটিংয়ে রেজুলেশনের টেম্পারিং করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগের তদন্তে নেমে বিশ্বভারতী একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই তদন্ত কমিটির তদন্তের পর ওই তিন আধিকারিক এর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্যি বলে প্রমাণিত হয়। এমনটাই দাবি বিশ্বভারতীর প্রশাসনিক আধিকারিকদের।
শনিবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ওই তিন আধিকারিক কে সরাসরি সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন। যা বিশ্বভারতীর ইতিহাসে এই প্রথম ঘটনা বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা মহলের। শুধু তাই নয় ওই তিন আধিকারিক এর বিরুদ্ধে কড়া ভাবে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কে কমিটির মধ্যে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী। ওই কমিটি ঠিক করবে তাদের বিরুদ্ধে কি শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়। অন্যদিকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এহেন তদন্ত কমিটির এমন সিদ্ধান্তের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষা মহলের একাংশ।
বিশ্বভারতী কর্মী মহলের একাংশের দাবি ঐদিন দায়িত্বশীল আধিকারিক এর বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরো একবার বিবেচনা করা জরুরি। যদিও বিশ্বভারতীর এখানে সিদ্ধান্তের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফের কোন উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিকের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে নারাজ কেউই। এমনকি যে তিন আধিকারিক এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তারাও উপাচার্যের সিদ্ধান্তের ঘটনার পর কোন প্রতিক্রিয়া সংবাদমাধ্যমকে দিতে চাননি।