
ইন্দ্রানী দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন চালনাকারী তৃণমূল সরকার বর্তমানে সাইকো সিরিয়াল কিলারে পরিণত হয়েছে বলে বিস্ফোরক দাবি করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, গভীর মানসিক সমস্যাগ্রস্ত সিরিয়াল কিলার যেমন একটা নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী একের পর এক খুন করা যায় ঠিক তেমনই তৃণমূল সরকার ঠিক একই রকমভাবে একের পর এক বিজেপি কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে দিচ্ছে ।
বিধায়ক থেকে শুরু করে বুথ কর্মী কেউ বাদ যাচ্ছে না এই সিরিয়াল কিলিংয়ের লিস্ট থেকে। আসলে পশ্চিমবঙ্গে এক আতঙ্কের দমবন্ধ করা পরিবেশ তৈরি করেছে তৃণমূল সরকার। যে বিষয় নিয়ে আমরা বিজেপির সাংসদরা সংসদের চলতি অধিবেশনে সরব হবো বলে ঠিক করেছি এবার। সংসদের বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে রবিবার ই দিল্লি এসেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সাংসদ দিলীপ ঘোষ ।সোমবার যুগশঙ্খ ওকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে দিলীপ বাবু বললেন সেই পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে শ্বাসরোধ করে গাছে ঝুলিয়ে দিয়ে একের পর এক বিজেপি কর্মী খুন করা হচ্ছে।
পঞ্চায়েতের সময় ২০১৮তে প্রথম ত্রিলোচন মাহাতো কে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে অদ্ভুতভাবে এই নতুন বিরোধী দলের কর্মীদের খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার এক অদ্ভুত সংস্কৃতির আনায়ন করেছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার । প্রথমে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের কর্মীদের শায়েস্তা করার চেষ্টা করেছিল । আর্থিক তছরূপি থেকে শুরু করে গাজা সহ নারকটিক এর বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা নির্বিচারে বিরোধী দলের কর্মীদের জেলে পুরতে থাকেন । সঙ্গে চলতে থাকে মারাত্মক অত্যাচার । কিন্তু যখন শাসকদল বুঝতে পারল তাদের অত্যাচারে তিতিবিরক্ত বাংলার মানুষ বিকল্প হিসাবে বিজেপিকে বেছে নিতে শুরু করেছে তখনই শুরু এলো খুনের রাজনীতি ইতিবৃত্ত ।
প্রত্যেকবারই আমাদের কর্মীদের খুন করে তাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়। সে হেমতাবাদ এর বিধায়কই হন বা দুদিন আগে আরামবাগের বিজেপি কর্মী গণেশ রায় । প্রত্যেক ক্ষেত্রে আমরা দেখছি খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার মামলা বলে চালানোর একটা চেষ্টা করা হচ্ছে। ১৯৮৯ সালে বাংলায় স্টোনম্যান-এর আবির্ভাব নিয়ে প্রচুর শোরগোল হয়েছিল। সে ছয় মাসে ১৩ জন মানুষকে মাথায় পাথর দিয়ে মেরে অর্থাৎ একই পদ্ধতিতে খুন করে গেছে । কিছুদিন আগেই চেয়ারম্যান বলে খ্যাত সিরিয়াল কিলার কামারুজ্জামান সরকারকে ফাঁসির চূড়ান্ত সাজা শুনিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে কোর্ট। ২০১৩ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে সাত জন মহিলাকে গলায় সাইকেলের চেইন জড়িয়ে খুন করেছিল ওই ব্যক্তি ।
ক্রাইম সাইকোলজিতে আছে একের পর এক খুন যদি একই পদ্ধতিতে করা হয় তাহলে সেটাকে সিরিয়াল কিলিং বলা হয় । এবং অবশ্যই কোনো মানসিক বিকারগ্রস্ত মানুষের কাজ বলে ধরে নেওয়া হয় । এক কথায় বলা হয় সাইকো সিরিয়াল কিলিং ।পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও বিজেপি কর্মীদের যেভাবে একের পর এক হত্যা করে ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাতে ক্রাইম সাইকোলজি অনুযায়ী সাইকো সিরিয়াল কিলিং এর তথ্যটা আবার একবার সামনে উঠে আসছে। আমরা সমস্ত বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মীদের জন্য অত্যন্ত চিন্তিত ।কারণ কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ।বর্তমান পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে আঠারোজন নির্বাচিত বিজেপির সাংসদ রয়েছেন। তা সত্ত্বেও আমাদের কর্মীদের উপর যদি এই ধরনের অত্যাচার হয় ,তাহলে যত নির্বাচন এগিয়ে আসবে সমস্ত বিরোধী দলের কর্মীদের উপর এই এই অত্যাচারের খাড়া নেমে আসবে । আমি ঠিক করেছি পার্লামেন্টে এই বিষয় নিয়ে আমরা সরব হব। এবং ভারতের গণতান্ত্রিক সরকারকে সহ ভারতের সমস্ত জনপ্রতিনিধিদের জানাবো পশ্চিমবঙ্গের একটি সংবিধানস্বীকৃত সরকার শাসক দল কিভাবে সমস্ত গণতান্ত্রিক কাঠামো মেনে মেনে ভেঙে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের নির্মমভাবে খুন করছে এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষের যেকোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত থাকার যে সংবিধান স্বীকৃত অধিকার তা নির্মমভাবে হত্যা করছে । কারণ গণতান্ত্রিক কাঠামো জন্য এ এক ভয়ঙ্কর বিপদ বলে আমি মনে করি