আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গারুলিয়ার তৃণমূল যুব নেতা সরকারি ক্ষতিপূরণের অর্থ ফেরত দিলেন

অলোক কুমার ঘোষ, ব্যারাকপুর: আমফান ক্ষতিপূরণের সরকারি সহযোগিতার ২০ হাজার টাকা পেয়েও সেই টাকা ফেরত দিলেন তৃণমূল যুব নেতা তথা উত্তর ২৪ পরগনার গারুলিয়া পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর রবীন দাস। রবীন দাস গারুলিয়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর ছিলেন। বর্তমানে তিনি গারুলিয়া শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা। তিনি শুক্রবার গারুলিয়া পুরসভায় গিয়ে পুরসভার আধিকারিকের কাছে ২০ হাজার টাকার চেক রাজ্য সরকারের কাছে ফেরত পাঠান। আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া স্বত্বেও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে তিনি আর্থিক ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ।
গত ২০ মে আমফান ঝড়ে তার টিনের বাড়ির টিন সব উড়ে যায়। ওই তৃণমূল কাউন্সিলরের স্ত্রী রিন্টি দাস রাজ্য সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতে প্রথম পর্যায়ে তার স্ত্রীর নামে আমফান ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা আসে। গারুলিয়া পুরসভা এলাকায় মোট ৩৫৭ টি পরিবার ক্ষতিপূরণের টাকার আবেদন জানায়। প্রথম পর্যায়ে এই পুরসভা এলাকায় ১৪০ টি পরিবারকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিগ্রস্থদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। সেই ১৪০ জনের মধ্যে তৃণমূল যুব নেতা রবীন দাসের স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা আসে। এরকম আরও কিছু তৃণমূল নেতাদের আত্মীয়রা আমফান ঝড়ে ক্ষতগ্রস্ত হিসেবে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য পান গারুলিয়া পুরসভা এলাকায়। এর পরেই ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করেন। অর্জুন সিং তথ্য পেশ করে বলেন, গারুলিয়া পুরসভা এলাকায় আমফানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা অর্থ সাহায্য পায়নি। তৃণমূলের নেতা ও কর্মীদের পকেটে ভরেছে।
গারুলিয়া পুরসভার প্রশাসক সঞ্জয় সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে নিজের অনুগামীদের আর্থিক সহায়তা পাইয়ে দিয়েছেন তিনি। গারুলিয়া পুরসভার প্রশাসক সঞ্জয় সিংয়ের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল যুবনেতা রবীন দাসের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ছিল স্ত্রীর নাম করে আমফানের ক্ষতিপূরনের টাকা নিয়েছেন তিনি। তিনি অবশ্য অস্বীকার করেননি সেই কথা।
জানা গেছে গারুলিয়া পুরসভার বেশ কয়েক জন ব্যাক্তি পুরসভার মাধ্যমে শুক্রবার রাজ্য সরকারের কাছে ২০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। তারা সকলেই টাকা ফেরতের চেকের সঙ্গে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার যে আর্থিক সহায়তা তাদের প্রদান করেছিল, তা তাদের দরকার নেই। ভুল করে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েছিল তারা।