
অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: রাজ্যে গত কয়েক মাসে সুস্থতার হার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যেই হাসপাতালে রোগীদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তারপরেও যাতে উপসর্গহীন করোনা রোগীদের দ্রুত ছুটি দিয়ে হাসপাতালে অন্যান্য পরিষেবা স্বাভাবিক করা যায় তার জন্য ফের নতুন অ্যাডভাইজারি জারি করলেও স্বাস্থ্য দফতর।
ওই অ্যাডভাইজারিতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, রোগী ততদিনই হাসপাতালে থাকবেন, যতদিন তার করোনার উপসর্গ থাকবে। উপসর্গহীন থাকলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর তারপরে তাকে বেশ কিছুদিন থাকতে হবে সেফ হোমে। একমাত্র বাড়ির পরিস্থিতি ঠিক থাকলে এবং ‘কেয়ার গিভার’ থাকলে তবেই রোগী বাড়িতে থাকার অনুমতি পাবেন। না হলে সেফ হোমের পর আরও কিছুটা সুস্থ হলে তবেই বাড়ি যেতে পারবেন রোগী।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক ভাবে রোগীর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়লেও এবং রোগী উপসর্গহীন হয়ে উঠলেও ফের রোগীর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। রোগী যদি সঠিক নজরদারিতে না থাকেন, তবে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
তাই স্বাস্থ্য দফতরের প্রোটোকল মনিটরিং দলের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে রাজ্যের সবক’টি সরকারি-বেসরকারি কোভিড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের তিনটি বিষয় মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। প্রথমত, রাজ্যের প্রতিটি ‘সেফ হোম’ একটি কোভিড হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। ‘সেফ হোমে’র কোনও রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। আবার কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোনও রোগীর উপসর্গের মাত্রা কমলে তাঁকে ‘সেফ হোমে’ এনে রাখার ব্যবস্থাও করতে হবে। হাসপাতাল এবং সেফ হোমের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক দল নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে রোগীর শারীরিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে তাকে কোথায় রাখা হবে সেটা ঠিক করবেন।
দ্বিতীয়ত, মৃদু উপসর্গযুক্ত এবং উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের গৃহ নিভৃতবাসে রাখা যেতে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে বাড়িতে আইসোলেশনে থাকার মতো পর্যাপ্ত জায়গা থাকতে হবে। আক্রান্তের পরিচর্যার জন্য সর্বক্ষণের লোক (কেয়ারগিভার) থাকতে হবে, তা-ও নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। তবেই বাড়ি যাবার অনুমতি পাবেন কোভিড রোগী।
তৃতীয়ত, প্রত্যেক হাসপাতালের মেডিকেল টিম কে করোনা রোগীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাত্রা নিয়মিত নজরদারিতে রাখতে হবে। তবেই রোগীর স্বাস্থ্যের উন্নতি সম্ভব হবে। করোনা রোগীদের দ্রুত সুস্থ করে তোলা হবে চিকিৎসকদের প্রধান লক্ষ্য।