দিদির রাজ্যে খুনের মিছিল, ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন মমতা: দিলীপ ঘোষ

শরণানন্দ দাস, জয়দেব লাহা, কলকাতা, দুর্গাপুর: নদিয়ার বিজেপি যুবকর্মী বাপি ঘোষের খুনের ঘটনায় ফের উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নৈতিক ভাবে ক্ষমতায় থাকার অধিকার হারিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের খুনের অভিযোগ নিয়ে বিজেপি সরব।রাজ্য সরকারের আত্মহত্যার তত্ত্ব নস্যাৎ করে সিবিআই তদন্ত চেয়েছে তারা।
সেই ঘটনার রেশ মেলাবার আগেই ফের খুন হয়েছেন নদিয়ার (উত্তর) কুলগাছির বাসিন্দা বিজেপির যুবকর্মী বাপি ঘোষ। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘দেবেন্দ্রনাথ রায়ের খুনের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেছেন। আমাদের বিধায়ককে রাতের অন্ধকারে খুন করা হয়েছিল। আর বাপিকে প্রকাশ্য দিবালোকে অনেক লোকের সামনে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এবার কি বলবেন দিদিমণি। এবারও কি বলবেন আত্মহত্যা।’
মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, ‘ ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি চলছে। দিদির রাজ্যে খুনের মিছিল চলছে।এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের দুজন নেতাকর্মী খুন হলেন।গতমাসে মেদিনীপুরে আমাদের যুবকর্মী পবন জানা খুন হয়েছেন। একজন বিধায়কের জীবন যেখানে সুরক্ষিত নয়, সেখানে সাধারণ মানুষ কার উপরে ভরসা করবে। রাজ্যে গুণ্ডারাজ চলছে। তৃণমূলের পতাকার তলায় এই গুণ্ডারা সুরক্ষিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘ এই সরকারের আর একমুহুর্ত ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। দিদি মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। অবশ্য উনি কোন নিয়ম মানেন না, সংবিধান মানেন না। তবে মানুষই ওঁকে কুর্সি থেকে টেনে নামাবে।
এদিন সকালে দুর্গাপুর মেনগেট এলাকায় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে চা চক্রে এসে তিনি বলেন,
‘গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে, দুর্নীতিমুক্ত, হিংসামুক্ত প্রশাসন সারা ভারত বর্ষে দিয়েছি। পশ্চিমবাংলাতেও দেবো। যাদের কষ্ট হচ্ছে, তাদের কষ্ট জানি। কয়লা টাকা খেয়ে কালো, মোটা হয়ে গেছে। বালির টাকা খেয়ে ফর্সা হয়ে গেছে। তারাই আমাদের চমকানোর চেষ্টা করছে। ওটা করতে যেও না। আমরা দিল্লী অব্দি চমকাতে পারি।”
বাঁকুড়া যাওয়া এদিন তিনি বলেন,” আমরা পীড়িত তাই আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে যাবো। ওরা কেন যাচ্ছে। কোভিড থেকে আমফানের দুর্নীতি সব খোলসা হয়ে গেছে সাধারন মানুষের কাছে। তাই বাঁচার জন্য দৌঁড়াচ্ছে। মনে হয় বাঁচবার জন্য যমরাজের কাছেও যাবে।”
আমফানে দুর্গত এলাকায় যেতে বাধা ও রাজারহাটে চা চক্রে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি হুঁশিয়ারীর সুরে বলেন,” কেউ যদি মনে করে আমরা কোথায় যাবো, কোথায় চা খাব ঠিক করে দেবে। একটু ধারনাটা পাল্টে নাও। সিপিএমের লোকেরা আগে চমকাতো। চারদিকে লাল ঝান্ডা, লাল চোখ দেখা যেত। এখন দুএকটা স্যাম্পেল হিসাবে আসে। আর লাল চোখ এখন গেরুয়া হয়ে গেছে। মানুষের কাছ থেকে সরে গেলে দড়ি দেখলে সাপ মনে হয়। দিদিমনি এখন সাপ দেখছেন। বিজেপিকে ভয় করছেন। বিজেপির মিটিং মিছিল আটকে দিচ্ছেন।”
এদিন দিলীপবাবু আরও বলেন,” গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে, দুর্নীতিমুক্ত, হিংসামুক্ত প্রশাসন সারা ভারত বর্ষে দিয়েছি। পশ্চিমবাংলাতেও দেবো। যাদের কষ্ট হচ্ছে, তাদের কষ্ট জানি। কয়লা টাকা খেয়ে কালো, মোটা হয়ে গেছে। বালির টাকা খেয়ে ফর্সা হয়ে গেছেন। তারাই আমাদের চমকানোর চেষ্টা করছেন। ওটা করতে যেও না। আমরা দিল্লী অব্দি চমকাতে পারি।” তিনি আরও বলেন, ‘দিদিমনির ভুলের জন্য কোভিড বাড়ছে। লকডাউন মানেনি। তার পরিনামে সাধারন মানুষের জীবন বিপন্ন। বেড নেই হাসপাতালে। বেড শুধু ওয়েবসাইট আর মমতা ব্যানার্জীর মুখে আছে। মানুষের এত দুর্গতি, কেউ রাস্তায়, কেউ বাড়ীতে মারা যাচ্ছে। এরকম অমানবিক সরকার আগে দেখিনি।”
তিনি আরও বলেন,” প্রধানমন্ত্রী হাততালি বাজিয়ে পুস্পবৃষ্টি করে স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিনন্দন জানাতে বলেছিলেন। দিদিমনির ভাইয়েরা বলেছিল হাততালি দিয়ে করোনা যাবে না। তাই বলছি হাততালি বাজিয়ে তৃণমূলকে বিদায় করব।”