fbpx
গুরুত্বপূর্ণপশ্চিমবঙ্গহেডলাইন

এইচআইভি পজিটিভ! চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ রোগী, প্রতিবাদ বিজেপির

মিল্টন পাল,মালদা: সরকারী হাসপাতালে মিলছে না এইচআইভি পজিটিভ রোগীর চিকিৎসা। ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে সরব এক রোগী।জানা গিয়েছে, এরমধ্যে ভাঙা পা নিয়ে হাসপাতালে টানা প্রায় দেড় মাস ধরে চিকিৎসাধীন  থাকার পর সঠিক না মেলায় বাধ্য হয়ে  সঠিক চিকিৎসার দাবিতে এবার জেলাশাসকের মারফত মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন ওই রোগীর পরিবার।ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতোর!

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেন মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রিন্সিপাল ডাক্তার পার্থ প্রতিম মুখোপাধ্যায়।ঘটনাটি ঘটেছে মালদা শহরের মাধব নগর এলাকায়।

জানা গিয়েছে,মালদার ইংরেজবাজারের মাধবনগর এলাকার বাসিন্দা পেশায় রংমিস্ত্রি ওই ব্যক্তি।গত মে মাসের ২৯ তারিখ একটি নির্মীয়মান বহুতল ভবনের রঙের কাজ করছিলেন তিনি। সেই সময় হঠাৎ তিন তলা থেকে পড়ে গুরুতর জখম হন।দূর্ঘটনায়  তার ডান পা ভেঙে যায়। একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা তাকে তার ডান পায়ে অস্ত্রোপচার করতে হবে।এরপর তার রক্ত পরীক্ষায় এইচ আই ভি পজেটিভ আসে।সেই সময় আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারকে  এইচ আই ভি রোগীর চিকিৎসা করার মতন পরিকাঠামো তাদের নেই বলেই বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।   সেই মতো তারা জুন মাসে ওই রোগীকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

পরিবারের অভিযোগ এইচ আই ভি সংক্রমণ থাকায় তার অস্ত্রোপচার করছে না হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কার্যত বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালে রয়েছেন ওই রোগী। বাধ্য হয়ে তারা এবার মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন চিকিৎসার দাবিতে।পরিবারের সদস্যরা জানায়,এই অবস্থায় অসহায় তারা। তার চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে।এমন অবস্থায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ায় তারমধ্যে আত্মহননের প্রবণতা দেখা দিয়েছে বলেও দাবি পরিবারের। তাই আমরা  সুচিকিৎসার আশায় বাধ্য হয়ে  মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছি। এমনটাই জানিয়েছে ওই রোগীর পরিবার।

ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপির মালদা জেলার সহ-সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় তিনি বলেন, “যেখানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর স্বয়ং স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সমস্ত জায়গায় তিনি প্রচার করছেন যে স্বাস্থ্য পরিসেবা পাওয়ার অধিকার সবার আছে। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে যেহেতু এইচ আই ভি পজিটিব সেখানে কোনো সরকারই চিকিৎসক তাকে দেখছেন না। তার কোনো রকম সুচিকিৎসা হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন জানানো সত্ত্বেও প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তর এই যে অমানবিক দৃষ্টান্ত মালদা জেলায় রেখেছেন এতে আমরা অবাক হয়ে যাচ্ছি। যেখানে এইচআইভি পজিটিভ রোগীর চিকিৎসা আছে। তার চিকিৎসা না করে সরকারি চিকিৎসকেরা কিভাবে ছাড় পাচ্ছেন?”

যেখানে মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যপরিসেবা পাওয়ার জন্য নানা রকম বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন সেই সমস্ত ডাক্তারদের ধৃষ্টতা হয় কিভাবে। যে সাধারণ একটি রোগীকে ফেলে রেখেছেন তার পাশে যাচ্ছেন না। এই অমানবিক ঘটনার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টি ওই রোগীর চিকিৎসার জন্য যেখানে যেখানে যেতে হয় যাবে প্রয়োজনে স্বাস্থ্য দপ্তর ঘেরাও করবে বলেও দাবি মালদা বিজেপির।

ঘটনা শুনে রীতিমতো স্তম্বিত তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসু। তিনি বলেন, “এখানে বামফ্রন্টের ৩৪ বছরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আকাশ-পাতাল তফাৎ রয়েছে। তারপরও যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে।যদি এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটে থাকে সবার কাছে দ্বারস্থ হয়ে থাকেন আমরা রাজনৈতিক ভাবে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বলব অতি দ্রুত এই রোগের চিকিৎসা করার জন্য”।

তিনি আরও বলেন, “যদি এখানে না হয় দরকার হলে যেখানে সম্ভব সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক। তাতে দল ও প্রশাসন দুই তার পাশে থাকবে।বিনা চিকিৎসায় এই রাজ্যে কেউ মারা যাবে না।এটা সরকারের ঘোষিত নীতি”।

অন্যদিকে, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাক্তার পার্থ প্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই রোগীর চিকিৎসা করানো হবে। কেন এতদিন চিকিৎসা করানো হয়নি সংশ্লিষ্ট বিভাগের যিনি আধিকারিক আছেন তার কাছে কারণ দর্শাতে বলা হবে”।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রোগীর আইনজীবী সন্টু মিঁয়া বলেন, “এই রোগীর মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তার চিকিৎসা করছেন না। সেই কারণে আমরা জেলাশাসক,মুখ্যমন্ত্রী ও মালদা মেডিকেল কলেজে অভিযোগ জানিয়েছে। এরপরেও যদি কোনো চিকিৎসা না হয় তাহলে আমরা কোর্টে মামলা করব”।

Related Articles

Back to top button
Close