গোঘাটে বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগ, উত্তেজনা, পুলিশের লাঠিচার্জ, প্রহৃত কয়েকজন সাংবাদিক
সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় গোঘাট থানার পুলিশ একজনকে আটক করেছে

গোপাল রায়, আরামবাগ: ফের এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার হওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল গোঘাটের খানাটি এলাকায়।এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা থাকায় ঘটনাস্থলে রয়েছে গোঘাট থানার পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে পথ অবরোধ বিজেপি কর্মীদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের লাঠিচার্জ। অন্য দিকে দোষীদের শাস্তির দাবি তুলে বিজেপির পক্ষ থেকে আরামবাগ জয়রামবাটি রোডের বকুলতলা এলাকায় পথ অবরোধ করে রাখে।
খবর করতে গিয়ে প্রহৃত সাংবাদিক। আহত এক ইউটিউব এর সাংবাদিক একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি। অন্যান্য সাংবাদিকদের আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় গোঘাট থানার পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত বিজেপি কর্মীর নাম গণেশ রায় (৬০)। শনিবার দুপুরের পর থেকে ওই বিজেপি কর্মীর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরিবারের লোকজনের খোঁজাখুঁজি করার পরও তার খোঁজ না মেলায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে তারা। এরপর রবিবার সকালে গোঘাট রেল স্টেশন সংলঙ্গ স্থান থেকে একটি গাছের ডালে গামছা গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপরই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। মৃত গণেশ রায়ের স্ত্রী সহ দুই ছেলে পেশায় দিনমজুর।পরিবারের ও বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়। ওই বিজেপি কর্মীকে তৃণমূলের লোকজনরা মেরে টাঙিয়ে দিয়েছে। এর পরেই গোঘাটের বকুলতলা এলাকায় পথ অবরোধ করে বিজেপি কর্মী সমর্থক। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনা সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ওপর। উত্তেজনাবশত ভাঙচুর করা হয় তৃণমূলের পার্টি অফিস।
ঘটনাস্থলে ছুটে যান আরামবাগের এসডিপিও নির্মল কান্তি দাস, গোঘাট থানার ওসি বঙ্কিম বিশ্বাস সহ বিশাল পুলিশবাহিনী। যাতে নতুন করে উত্তেজনা না ছড়ায় এলাকায় রোডমার্চ করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন আরামবাগ জেলা সাংগঠনিক সভাপতি বিমান ঘোষ। বিমানবাবু বলেন, বাংলা জুড়ে সন্ত্রাস চলছে আবারও তার পুনরাবৃত্ত ঘটল। নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে বিজেপি কর্মী গনেশ রায়কে। তার ছেলেকে বহুবার ভয় দেখিয়েছে তবু তাদের তৃণমূলে যোগদান করাতে পারেনি। আর গতকাল তৃণমূল কয়েকশো কর্মীদের নিয়ে বাইক মিছিল করে ওরা। আর আজ আমাদের কর্মীকে খুন করেছে।
অন্যদিকে তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, বিজেপি গোঘাটে যা করছে খুনের রাজনীতিকে আমদানি করে জমি তৈরি করার চেষ্টা করছ। যিনি খুন হয়েছে তিনি বাম কর্মী ছিলেন।দিন কয়েক আগে বিজেপিতে মিশেছে।তবে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি যেভাবে নিজেদের কর্মী খুন করে রাজনীতি করছে তা বাংলার মানুষ তাদের এই পরিকল্পনা ব্যর্থ করবে। অন্যদিকে পুলিশ মৃতদেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। গণেশ রায়ের বৌমা নদী রায়ের অভিযোগ, তৃণমূলের লোক জনেরা মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে।
আরামবাগের এসডিপিও নির্মল কান্তি দাস জানান,রবিবার সকালে রেলস্টেশন সংলগ্ন একটি ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারি গণেশ রায় নামে ওই ব্যক্তি গরুর পাইকারের কাজ করে একই কাজে বেরিয়ে ছিল। রাতে তিনি বাড়িতে ফেরেননি।
আরও পড়ুন:ফের রাজনৈতিক জগতে মৃত্যুর ছায়া, প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রঘুবংশ প্রসাদ সিং
আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি মদ্যপান করে বাড়িতে ঢুকতেন না। মৃতদেহ যখন নিয়ে আসা হয় তখন সারা শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন চিহ্ন ছিল না। মুখ থেকে তার লালা বেরিয়েছে। পা ও পায়ের আঙুলগুলো মাটির দিকে টাচ করা ছিল। মৃত্যুর কারণ জানার জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজে দেহ পাঠানো হয়েছে।ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে সঠিক মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এলাকায় চলছে পুলিশের টহলদারি।