কোচবিহার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেনের গাড়ি ভাঙচুর…প্রতিবাদে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা

জেলা প্রতিনিধি, কোচবিহার: তৃণমূল নেতা তথা কোচবিহার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেনের গাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে রাতেই দিনহাটা থানায় অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হল আলম অনুগামী তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। শনিবার রাত দশটা নাগাদ তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা দিনহাটা থানায় বিক্ষোভ দেখানোকে ঘিরে ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ চলাকালীন অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব হন কর্মী-সমর্থকরা। এদিনেই বিক্ষোভ চলাকালীন সেখানে উপস্থিত ছিলেন নুর আলম হোসেন ছাড়াও যুব তৃনমূলের কোচবিহার জেলা সম্পাদক সাবির সাহা চৌধুরী সহ অনেকেই। পাশাপাশি এদিন ভাঙচুরের ঘটনায় বিজেপি দলের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্যই বলেন, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, বিজেপির যুব মোর্চার ডাকে ওই দিন বিকালে সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দিনহাটার গোসানিমারিতে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভাকে কেন্দ্র করে গোসানিমারি এবং সিতাইয়ে তৃণমূল বিজেপির মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এমনকি সন্ধ্যায় গোসানিমারিতে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে তালা দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনার খবর পেয়ে তৃণমূল নেতা কোচবিহার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেন গোসানিমারি পৌঁছালে তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
বিজেপির কোচবিহার জেলা সহ-সভাপতি ভবেন বর্মণের বাড়ি থেকে একদল দুষ্কৃতী নূর আলম হুসেনের গাড়ির উপরে আক্রমণ করে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পরই রাতেই তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের পাশাপাশি তার অনুগামীরা দিনহাটা থানায় বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশকে লিখিতভাবে অভিযোগ করা ছাড়াও দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের আশ্বাস এরপর রাত সোয়া ১১ টা নাগাদ বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গোসানিমারিতে বিজেপির যুব মোর্চার ডাকে ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক, বিধায়ক মিহির গোস্বামী, জেলা সভাপতি মালতি রাভা রায়, যুব মোর্চার জেলা সভাপতি অজয় সাহা, দলের জেলা সহ-সভাপতি ভূপেন বর্মন প্রমুখ। এদিন সিতাই ও গোসানিমারি তে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে একজনকে মাথাভাঙ্গা নিয়ে যাওয়া হয় বলেও জানা গিয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বাহিনী সেখানে ছুটে যায়।
আরও পড়ুন: ‘আবারও রাজস্থানের সরকার ফেলতে মরিয়া চেষ্টা করছে বিজেপি’, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী গেহলটের
তৃণমূল নেতা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেন বলেন, “এদিন গোসানিমারিতে দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও তালা দেওয়ার কথা জানতে পেরেই তিনি সেখানে পৌঁছালে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা তার গাড়ি ঘিরে ধরে তাকে খুনের চেষ্টা এবং গাড়ি ভাঙচুর করে। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে রক্ষা করে। এই ঘটনায় দলীয় কর্মী সমর্থকরা দিনহাটা থানায় বিক্ষোভ দেখায়। বিজেপি দলের বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে আমি দিনহাটা থানায় লিখিত অভিযোগ করি।
বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক সুদেব কর্মকার বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। নুর আলম হোসেন শিক্ষিকা ধর্ষণ কাণ্ডে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত। দলের ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করেই তৃণমূলের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরেই ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতা নুর আলমের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে আমাদের কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে’। দিনহাটা থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত জানান, ‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে’।