মালদায় ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, এলাকার যুব নেতাকে খুনের হুমকি বিধায়কের

মিল্টন পাল, মালদা: সামনেই বিধানসভা ভোট তার আগেই বিধায়ক ও যুব নেতার প্রকাশ্যে গোষ্ঠী কোন্দল। তৃণমূল বিধায়কের অডিও ভাইরাল সোশ্যাল সাইটে। সেখানেই ধর্ষণের মামলায় এলাকারই জেলা পরিষদ সদস্যের স্বামী তথা এলাকার যুব নেতাকে থানায় টাকা খাইয়ে গুলি করিয়ে দেওয়ার হুমকি তৃণমূল বিধায়কের। মালদার রতুয়া বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের এই অডিওকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য। গোটা ঘটনায় জেলা সভানেত্রীর কাছে অভিযোগ দায়ের জেলা পরিষদ সদস্যর স্বামীর।
সামনেই বিধান সভা ভোট ঠিক তার আগেই পিকের ফরমানে জেলার বিভিন্ন জায়গায় দল ভাঙিয়ে তৃণমূলে যোগদান পর্ব চলছে। সেখানে তৃণমূল যুবনেতা জেলা পরিষদ সদস্যর স্বামী মহন্মদ ইয়াসিন শেখ ভালো কাজ করছেন। কিন্তুু অন্যদিকে রতুয়ার বিধায়ক কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়ে এলাকার মানুষের জন্য কোন কাজ করছে না। এমনকি রতুয়া এলাকার সবচেয়ে বড়ো সমস্যা ভাঙন। সেই ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষদের কোন সাহায্য তো দুরের কথা ঘর থেকে বেড়ান না তিনি বলে অভিযোগ যুব তৃণমূলের নেতা মহন্মদ ইয়াসিনের। আর এতেই হিংসায় তিনি ভুল কথা বলে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে বিধায়কের এই অডিওটি ভাইরাল হতেই রতুয়া দেবীপুরের বাসিন্দা এক মহিলা তৃণমূল কর্মী অভিযোগ করেন। তাকে রতুয়া তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় এলাকারই ডাকসাইটে তৃণমূল যুব নেতা মোহাম্মদ ইয়াসিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করতে বলে। এর বদলে তাকে ১ লক্ষ টাকা ও একটি চাকরি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু ওই মহিলা তৃণমূল কর্মী এতে রাজি হয়নি।
এলাকার যুব তৃণমূল নেতা মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, বিধায়ক যেদিন থেকে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছে সেদিন থেকেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমার জনপ্রিয়তায় তিনি হিংসা করেন। তিনি বিরোধী দলের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে তৃণমূলের ক্ষতি করছে। আমি জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে লিখিত ভাবে বিষয়টি অভিযোগ জানিয়েছি।
রতুয়ার বিধায়ক সময় মুখোপাধ্যায় বলেন, আমার ইমেজকে কালিমালিপ্ত করার জন্য এটা একটি ষড়যন্ত্র। সামনে ভোট আসছে। যদি দল আমাকে টিকিট দেয় তাহলে মমতা ব্যানার্জিকে বলব যাতে আমার ইমেজটা খারাপ হয় তার বহু দিন ধরেই চেষ্টা করছে এরা। এরা স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তাকে নষ্ট করার জন্য একটা ষড়যন্ত্র করছে। এরকম কথা আমি বলি না এটা আমার রুচি নয়। যে পরিবার থেকে আমি এসেছি এটা আমাদের সংস্কৃতি নয়। জেলা তৃণমূল নেত্রী মৌসুম নূর আমাকে বলেছে। দল এটা তদন্ত করবে।এবং যারা এই চক্রান্তটা করছে বা আমি যদি বলে থাকি দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
গোটা ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। দলের পক্ষ থেকে অবশ্যই তদন্ত করা হবে। তারপর দল নিশ্চয়ই একটা ব্যবস্থা নেবে।আমরা রাজ্যের নেতৃত্বের কাছেও এই বিষয়টি পাঠাবো। সঠিক সিদ্ধান্ত হবে সেই মতই কাজ করা হবে। তার অডিও ও একটি চিঠি অফিসে পাঠিয়েছে দল খতিয়ে দেখছে বিষয়টি।
তৃণমূল নেতৃত্বের এই অন্তর্কলহকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছে বিজেপি। বিজেপির সহ সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থাটা দেখুন, নিজের এলাকার বিধায়ক নিজের দলের জেলা পরিষদ সদস্যের স্বামীর বিরুদ্ধে যদি এমন কথা বলে। আমাদের বিশ্বাস তৃণমূল দলটা করোনার শেষ তৃণমূল দলটা ও শেষ হয়ে যাবে। গোটা পশ্চিমবঙ্গ তথা মালদা জেলা এবং সমস্ত মানচিত্র থেকে তৃণমূল দলটা উঠে যাবে এটা আমরা বলতে পারি।