fbpx
পশ্চিমবঙ্গহেডলাইন

বামেদের ডাকা ধর্মঘটের বিরোধিতায় পথে নেমে গান গেয়ে মিছিল করল তৃণমূল

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: ধর্মঘটের সমর্থনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পথে নামেন বাম কর্মী ও সমর্থকরা। এদিন তাঁরা কোথাও মিছিল করলেন আবার কোথাও পথ অবরোধ করে ধর্মঘটের সমর্থনে স্লোগান তুললেন। ডান্ডায় বাঁধা দলের ঝান্ডা ইট দিয়ে রাস্তার উপরে দাঁড় করিয়ে রেখে ক্রিকেটও খেললেন ধর্মঘট সমর্থনকারীরা। কিন্তু এতসব কিছুর পরেও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশন গুলির ডাকা ধর্মঘটের তেমন কোনও প্রভাব পূর্ব বর্ধমানে পড়ল না। যদিও বাম নেতৃত্বের দাবি ধর্মঘট পুরোপুরি সফল হয়েছে।

ধর্মঘটের সমর্থনে এদিন সকালে শহর বর্ধমানে জেলা সিপিআই(এম) কার্যালয় থেকে মিছিল বের হয়। সেই মিছিল শহরের তেঁতুলতলা ও রাণীগঞ্জ বাজার হয়ে জিটি রোডে ওঠে। ধর্মঘটীরা কয়েকটি বেসরকারি ও সরকারি বাস আটকানোর চেষ্টা করে। তবে পুলিশ সজাগ থাকায় তারা বাস বেশিক্ষণ আটকাতে পারেনি। তা নিয়ে কোন ঝামেলা অশান্তিও হয়নি। শহর বর্ধমানের তেঁতুলতলা বাজার, স্টেশন বাজার, কালনাগেট, উদয়পল্লী বাজারে অন্যান্য দিনের মতই এদিন সকালেও সবজী বাজার বসে। পথঘাটও ছিল স্বাভাবিক। ধর্মঘটের বিরোধিতায় পাল্টা পথে নামে তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন। বর্ধমান স্টেশন চত্ত্বর থেকে তারা মিছিল বের করে। কোন স্লোগান ছাড়া গানের সুরে সুরে হাততালি দিয়ে হওয়া অভিনব ওই মিছিল জিটি রোড ধোরে কার্জনগেট এলাকায় পৌঁছায়।

গ্রামীন বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গাতেও ধর্মঘটীরা সকাল থেকে পথে নামে। এদিন সকালে পালসিটে রেল লাইনে দাঁড়িয়ে অবরোধ করে ধর্মঘটীরা। তার ফলে কিছু সময়ের জন্য ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।পরে পুলিশ ধর্মঘটীদের সরিয়ে দেয়। বেলা বাড়ার পর থেকে বর্ধমান হাওড়া কর্ড ও মেইন শাখায় স্বাভাবিক থাকে ট্রেন চলাচল। ধর্মঘটীরা পালসিটে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক
অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। তার ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে বিভিন্ন দূরপাল্লার যানবাহন,প ণ্যবাহী লরি ও সরকারি বাস। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে ধর্মঘটীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি বেঁধে যায়। ভাতারেরও ধর্মঘটের সমর্থনে পথে নামে বামেরা। কালনার এসটিকেকে রোডে সমুদ্রগড় রেল বাজারে সড়ক পথ অবরোধ করে ধর্মঘটীরা। অবরোধ তুলতে হিমশিম খেতে হয় নাদনঘাট থানার পুলিকে। দুই জায়গা থেকেই পুলিশ অবরোধকারীদের হঠিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। অন্যদিকে ধর্মঘটের তোয়াক্কা না করেই এদিন বেলা দশটার পরেই কালনায় খুলেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক। ধর্মঘটীরা কালনার শ্রীরামপুরের রাষ্টায়ত্ত ব্যাঙ্ক শাখায় ঢুকে জোর করে কাজকর্ম বন্ধ করে দেয়।

ওই জায়গায় রাস্তায় শুয়ে পড়ে ধর্মঘটীরা পথ অবরোধ করে ।কালনার পারুলিয়া বাজারেও ধর্মঘটীরা ঘন্টা খানেক রাস্তা অবরোধ করে। তার ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ ধর্মঘটীদের সয়িয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। গলসি বাজারেরও ব্যাঙ্কের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে ধর্মঘটীরা বিক্ষোভ দেখায়। ব্যাঙ্কে কাজে যোগ দিতে এসে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ব্যঙ্ক কর্মীদের। গলসির পুরসা ও বড়মুড়িয়ায় জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় ধর্মঘটীরা। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌছে ধর্মঘটীদের সরিয়ে দেয়। তবে ঝামেলার আশংকায় গলসি সহ জেলার সর্বত্র বহু ব্যবসায়ী এদিন দোকান খোলা থেকে বিরত থাকেন।

তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র তথা জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু জানিয়েছেন, “এই রাজ্যের মানুষ বন্ধ বা ধর্মঘট চায় না। বন্ধ, ধর্মঘট করে আখেরে ক্ষতি ছাড়া লাভ কিছু হয় না। তাই গোটা রাজ্যের পাশাপাশি এই জেলার মানুষও এদিনের ধর্মঘট প্রত্যাখ্যান করেছেন। ”

যদিও জেলার সিপিআই (এম )সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক দাবি করেছে, “এবারের বন্ধের ইস্যুগুলি সাধারণ মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। তাই মানুষের সমর্থনে ধন্ধ সর্বাত্মকভাবে সফল হয়েছে।

Related Articles

Back to top button
Close