বারো মাস লালশাকের ফলন

নিজস্ব প্রতিনিধি: কৃষিপ্রধান দেশ ভারতের সর্বত্রই সবজির পাশাপাশি রয়েছে নানা শাকপাতা। পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্রই নানা ধরনের শাকের চাষ হয়। লালাশাক এদের মধ্যে অন্যতম। লালাশাক, সুরেশ্বর, কাটোয়া ডাটা ইত্যাদির ফলন পদ্ধতি খুবই সহজ।সুরেস্বর কিংবা কাটোয়া ডাটা বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া গেলেও লালশাক সারা বছর বাজারে পাওয়া যায়।
লালশাকের বিজ্ঞানসম্মত চাষপদ্ধতি ঠিক কেমন?
জললিকাশী ব্যবস্থা যুক্ত ডঁচু দোআঁশ মাটি লালশাক চাষের জন্য আদর্শ। চাষের শুরতেই মাটি গভীরভাবে কর্ষণ করে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। বিঘা প্রতি ১ টন হারে জৈবসার ব্যবহার করা উচিত। শেষ চাষে মূল সার হিসাবে বিঘা প্রতি ১৪ কেজি নাইেট্রাজেন, ৭ কেজি ফসফেট এবং কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ঋতুভিত্তিক ফসল মটরশুঁটি চাষ
এরপরে তিনফুট চওড়া এবং সুবিধে মতো লম্বা মাটির বেড তৈরি করতে হবে। প্রতি বেডের মাঝে ১ ফুট চওড়া নিকাশী নালা রাখতে হবে। ১ বিঘা জমিতে লালশাকের বীজ লাগে ২০০ গ্রাম। বীজ রোপণের আগে কার্বেন্ডাজিম কিংবা ক্যাপ্টেন বা থাইরাম ২-৩ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে তাতে বীজ শোধন করে নিতে হবে। জমিতে হালকা সেচ দিতে হবে। গাছ থেতে গাছের দূরত্ব হবে ১ ফুট।
আরও পড়ুন: লকডাউনের জেরে সংকটে উত্তর দিনাজপুর জেলার আনারস চাষিরা
বীজ লাগানোর ২১ দিন পর চাপান সার দিতে হবে। বিঘা প্রতি ৪ কেজি নাইেট্রাজেন ও ৪ কেজি পটাশ সার ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার ৪০-৪২ দিনের মাথায় পুনরায় চাপান সার (একই পরিমাণ) দিতে হবে। বাড়তি গাছ ও আগাছা নিড়ানি দিয়ে তুলে ফেলতে হবে। বিঘা প্রতি ৪ কেজি নাইেট্রাজেন ও ৪ কেজি পটাশ সার ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার ৪০-৪২ দিনের মাথায় পুনরায় চাপান সার (একই পরিমাণ) দিতে হবে। জমি নিয়মিত পরিদর্শন করতে হবে এবং রোগ-পোকার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
গরমকালে বীজ ছড়ানোর ৩০ দিনের পর থেকেই শাক তোলা যায়। শীতকালে
আরও একটু বেশি সময় লাগে। ৪৫-৫০ দিনের মধ্যে শাক তোলা যায়। তবে যখনই
চাষ করা হোক না কেন প্রতি বিঘায় ১৩-১৬ কুইন্টাল লালশাকের ফলন চাষিরা পান।
মূলত লালশাকে রোগ-পোকা তেমন একটা দেখা যায় না। তবে সাদা মাছির উপদ্রব
থেকে বাঁচতে ফেরোমন ফাঁদ, লাইট টব ইত্যাদি জমিতে রাখলে ভালো হয়। এই চাষে
বিশেষ খরচ নেই। বিঘা প্রতি প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা লাভ থাকে চাষিদের।