দাদাকে খুন করেছি, এবার শাস্তি পেতে চাই!
বাড়ির বারান্দার মাটি খুঁড়ে উদ্ধার মৃতের হাড়গোড়

অলোক কুমার ঘোষ, ব্যারাকপুর: ইঞ্জিনিয়ার দাদাকে হত্যার দায় স্বীকার করে জগদ্দল থানায় আত্মসমর্পণ করল দুই ভাই। খুনের ৬ বছর পর মৃতের বাড়ির বারান্দার মাটি খুঁড়ে মৃতের হাড়গোড় উদ্ধার করল জগদ্দল থানার পুলিশ। তীব্র চাঞ্চল্য জগদ্দল থানার আদর্শপল্লী এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্তদের উপযুক্ত বিচার চাইছেন। ৬ বছর আগে ইঞ্জিনিয়ার দাদাকে সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে খুন করে ঘরের বারান্দায় পুঁতে দিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল ২ ভাই। শুক্রবার রাতে জগদ্দল থানায় গিয়ে অভিযুক্ত ২ ভাই নিজেদের অপরাধ কবুল করে আত্মসমর্পণ করে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল থানার অন্তর্গত পিনকল আদর্শপল্লী এলাকায়। জগদ্দল থানার পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
জানাগেছে, মৃতের নাম নেপু শীল, পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে এক শীতের রাতে ইঞ্জিনিয়ার দাদা নেপু শীলকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল তার দুই ভাই অপু ও তপু শীল। ৬ বছর পরে বাড়ি ফিরে দাদাকে হত্যার অনুশোচনায় জগদ্দল থানার পুলিশের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে তারা। পুলিশ প্রথমে খুনি অপরাধী দুই ভাইয়ের অপরাধের কথা বিশ্বাস করতে চায়নি, পরে তারা জগদ্দল থানার পুলিশ কর্মীদের বোঝান তারাই ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে বড় দাদা নেপু শীল শ্বাসরোধ করে খুন করার পর বাড়ির বারান্দায় পুঁতে রেখে পালিয়ে যায়। অনুশোচনায় নিজেদের অপরাধ কবুল করে আইনত শাস্তি পেতে চায় তারা। সেই কারণে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করছে।
আরও পড়ুন:শিক্ষা থেকে বঞ্চিত পড়ুয়ারা, স্টাডি সেন্টার খুলে সাহায্যের হাত বাড়াল RSS
শুক্রবার মাঝ রাতে জগদ্দল থানার পুলিশ আদর্শপল্লীর শীল বাড়িতে এসে আদর্শপল্লীর শীল বাড়ির বারান্দায় খোঁড়াখুড়ি করে মৃত নেপু শীলের দেহের হাড়গোড় উদ্ধার করে। উদ্ধার করা হয় মৃতদেহের জামা কাপড়ও। এরপরই জগদ্দল থানার পুলিশ অভিযুক্ত দুই ভাই অপু ও তপু শীলকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের জেরা করছে তদন্তকারি পুলিশ অফিসাররা।
জগদ্দল থানার পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, দাদা নেপু শীল মদ্যপ অবস্থায় দুই ভাইয়ের উপর অত্যাচার করত। আমাদের মারধর করত। খুনের আগের রাতেও মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল। দাদার অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পেতে আমরা ওকে খুন করে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম। তবে ৬ বছর পরে আমরা গ্রামে ফিরে আসি ওই বাড়িতে থাকব বলে, তখন সেদিনের খুনের ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়, যে দাদা মারত, সেই আমাদের পড়াশোনা করিয়েছে। আমরা সেই দাদাকে খুন করে অপরাধ করেছি, এখন শাস্তি পেতে চাই, তাই থানায় এসে নিজেরাই ধরা দিলা ।” দুই ভাইকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে জগদ্দল থানার পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দুই অভিযুক্ত ভাইয়ের কঠোর শাস্তি হোক।