হিন্দুর মৃতদেহ কাঁধে তুলে নিয়ে শ্মশানে সৎকার করলেন দুজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যুবক
প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: ধর্ম যার যাই হোক । শেষ কথা মানবতা। আর সেই মনবতার মূল মন্ত্রকে আঁকড়েই এক হিন্দুর মৃতদেহ সৎকারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুজন যুবক। তারা হলেন আজিজুর রহমান ও লালন সেখ। তাদের এমন মহতি কর্মকাণ্ডের স্বাক্ষী থাকলেন পূর্ব বর্ধমানের গলসির আপামোর বাসিন্দা । সম্প্রীতির এমন এক অনন্য নজির সৃষ্টিকারী দুই যুবকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ গলসিবাসী ।
আজিজুর ও লালনের কথায় জানা গিয়েছে, শান্ত হাজরা নামে এক ব্যক্তি গলসি ১ নম্বর ব্লকের গলিগ্রামের বসবাস করতেন । বেশ কিছুদিন আগে গাছ থেকে পড়ে গিয়ে শান্ত হাজরা মারাত্মক জখম হন।অনেক চিকিৎসা করেও তাকে সুস্থ করা যায়নি। তিনি দীর্ঘদিন বিছানায় শয্যাশায়ী ছিলেন । পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি বাড়িতে শয্যাশায়ী থাকায় শান্তর গোটা পরিবার বিপাকে পড়ে যায় । এই খবর পেয়ে পরিবারটির পাশে দাঁড়ায় এলাকারই যুবক আজিজুর। তাঁকে পূর্ণ সহযোগীতা করে এলাকার অপর যুবক লালন তারা আগেও হিন্দু ,মসুলিম নির্বিশেষে এলাকার অনেক অসহায় গরিব পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল ।
আরও পড়ুন: করোনায় মারা গেলে সরকারি কর্মীর পরিবারের সদস্যকে চাকরি, নির্দেশিকা জারি নবান্নের
আাজিজুর জানিয়েছে, শান্ত মঙ্গলবার মারা যায় । তার পর কোভিডের কারণে তাঁর দেহ সৎকার নিয়ে প্রতিবেশীদের অনেকেই টালবাহানা শুরু করেন। আতঙ্কে অনেকেই শ্মশানে যেতে রাজি হতে চাইছিলেন না । এই পরিস্থিতিতে শেষমেষ তাকে ও লালনকেই মৃতদেহ সৎকারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হয় । গ্রামের কয়েকজনকে বুঝিয়ে রাজি করে তিনি ও লালন রাতে মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে শ্মশানে পৌঁছান । সমস্ত দায়দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে হিন্দু আচার প্রথা মেনে শান্তর মৃতদেহ সৎকার করান ।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার মেশানো জল খেয়ে গুরুতর অসুস্থ শিশু
গলসির বিধায়ক আলোক মাঝি সব শুনে আজিজুর ও লালনের এই মহতি কাজে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন । তিনি বলেন , আজিজুর ও লালন এই প্রথম এমন মানবিক কাজ করলো এমটা নয় । আগেও তারা অনেক অসহায় গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে । এদিন তারা সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরি করলো ।