একবর্ষজীবি পালংশাক…
নিজস্ব প্রতিনিধি: শাকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘পালংশাক’। দুরকমের পালংশাক হয়। যেমন ১) বীট পালং ও ) পালং উরা জাতের মধ্যে নিকট সাদৃশ্য দেখা যায়। পালং গাছের বৈশিষ্ট হল পুরুষ ও স্ত্রী ফুল আলাদা আলাদা গাছে হয়। অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গ সহ আমাদের দেশের সর্বত্রই পালং চাষ হয়।
কচি সবুজ পাতা রান্না করে খাওয়ার জন্য প্রধানত চাষ করা হয়ে থাকে। পালংয়ে যথেষ্ট পরিমানে ভিটামিন-এ, বি ও সি এবং ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। পালংশাক প্রধানত শীতকালীন ফসল। তবে আজকাল সারা বছরই এর চাষ করা হয়ে থাকে। এই শাক খুব ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না। এই গাছ ৩০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়। পালংশাক মূলত একবর্ষজীবি উদ্ভিদ।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা সংগ্রামীদের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামকে শ্রদ্ধা জানিয়ে শহিদ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল মেডেল
বোনার সময়: ৪টি পালং কিছুটা গরম সহ্য করতে পারে বলে আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে চাষ শুরু হয়। কিন্তু অন্য পালং শাক অক্টোবর-নভেম্বর মাসে চাষ শুরু হয়।
মাটি ও জমি তৈরি: পালং বিভিন্নরকম মাটিতে জন্ম নেয়। তবে দোঁয়াশ ও এঁটেল-দোঁয়াশ মাটিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। লবণাক্ত এবং ক্ষারযুক্ত মাটিতেও পালং চাষ করা চলে। মাটিতে ৩-৪ বার মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি প্রস্তুত করতে হবে।
সার প্রয়োগ: দ্রুত বৃদ্ধির জন্য এই শাকে প্রচুর সার দরকার হয়। জমি তৈরির সময় গোবর সার হেক্টর প্রতি ১৫০ কুইন্টাল প্রয়োগ করুন। ভালোভাবে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিন। হেক্টর প্রতি ৪৮ কেজি নাইট্রোজেন, ৫০ কেজি ফসফেট এবং ৫০০ কেজি পটাশ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। একমাস পরে ইউরিযা চাপান সার হিসেবে দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। ছ’সপ্তাহ পরে প্রতিবার পাতা কেটে নেওয়ার পরে ২০ কেজি নাইট্রোজেন, (৪৪ কেজি ইউরিয়া) চাপান হিসেবে দিলে পরবর্তী ফসল ভালো হয়।
বীজের হার: হেক্টর প্রতি ৩০টি বীজ প্রয়োজন হয়।
বোনার পদ্ধতি: তিন-চারটে চাষও মই দিলে মাটি ঝুরঝুরে হয়। প্রতি সারিতে ৫-৬ সেন্টিমিটার অন্তর অন্তর বীজ বুনলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
সেচ: বীজ বোনার পরই জমিতে সেচ দেওয়া দরকার পড়ে। ১০-১২ দিন অন্তর সেচ দিলেই হবে।
ফসল কাটা: বীজ বোনার ৬-৮ সপ্তাহ পরে বীজ বোনার উপযুক্ত সময়। গাছের শীষ বের না হওয়া পর্যন্ত ১৫-২০ দিন অন্তর অন্তর ফসল কাটা যেতে পারে। প্রতিবার ফসল কাটার পরে ৪৪ কেজি ইউরিয়া গাছের সারির উপর দিকে প্রয়োগ করে হালকাভাবে মাটিতে মিশিয়ে দিলে ভালো হয়।
ফলন : হেক্টর প্রতি ৭০-৮০ কুইন্টাল সবুজ পাতা পাওয়া যায়।