কোভিড-১৯ মোকাবিলায় মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ড. হর্ষবর্ধন

নয়া দিল্লি, (সংবাদ সংস্থা): কোভিড–১৯ এর মোকাবিলার জন্য গঠিত মন্ত্রিগোষ্ঠীর সপ্তদশ বৈঠক পৌরহিত্য করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ড. হর্ষবর্ধন। রবিবার নতুন দিল্লির নির্মাণ ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ড. হর্ষবর্ধন ছাড়াও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর, অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী শ্রী হরদীপ সিং পুরী এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্রী অশ্বিনীকুমার চৌবে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:সৎ বাবার বিকৃত যৌন লালসায় অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী, অভিযুক্তকে বেধড়ক মার প্রতিবেশীদের
এই বৈঠকে সংক্রমিতদের সুস্থ হয়ে ওঠার হার, কত দিনে সংক্রমণ দ্বিগুণ হচ্ছে সেই বিষয়ে তথ্য, লালারসের নমুনা পরীক্ষার হার, এবং বিভিন্ন রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বিষয়ে আলোচনা হয়। মহারাষ্ট্র, তামিলনাডু, দিল্লি, তেলেঙ্গানা, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ – এই ৮টি রাজ্যের বিষয়ে জানানো হয়। দেশে সংক্রমিতদের মধ্যে ৮৫.৫ শতাংশ এবং এই ভাইরাসের কারণে মোট মৃত্যুর ৮৭ শতাংশ এই রাজ্যগুলিতেই হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে ১৫টি কেন্দ্রীয় দল, এই মহামারীর মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনকে সাহায্য করেছে। এই দলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, মহামারী বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা ছাড়াও একজন বর্ষীয়ান যুগ্মসচিব ছিলেন।
বর্তমানে গুজরাট, মহারাষ্ট্র এবং তেলেঙ্গানায় আরেকটি কেন্দ্রীয় দল সফর করছে। মন্ত্রিগোষ্ঠীকে ‘ইতিহাস ‘এবং ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। এই অ্যাপগুলির সাহায্যে সংক্রমিতদের সংস্পর্শে আসা, সম্ভাব্য হটস্পট অঞ্চল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন জানতে পারে।
আরও পড়ুন:চিনা আগ্রাসনের প্রতিবাদে জোম্যাটো ডেলিভারি বয়দের প্রতিবাদ
মন্ত্রিগোষ্ঠীকে জানানো হয়েছে, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে কোভিডের নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলা, জটিল রোগে সংক্রমিত ব্যক্তি ও প্রবীণ নাগরিকদের সম্পর্কে তথ্য সহ এই মহামারীর মোকাবিলায় বিভিন্ন ব্যবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
আইসিএমআর এর মহানির্দেশিক ড. ভার্গব, লালারসের নমুনা পরীক্ষার বিষয়ে বিভিন্ন কৌশলের কথা জানান। তিনি সেরোলজিক্যাল সমীক্ষা, প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ নানা তথ্য তুলে ধরেন। গত ২৪ ঘন্টায় ২,২০,৪৭৯টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। অর্থাৎ দেশে এপর্যন্ত ৭৯,৯৬,৭০৭ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। দেশে এখন ৭৪১টি সরকারি এবং ২৮৫টি বেসরকারি পরীক্ষাগারে অর্থাৎ মোট ১০২৬টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
মন্ত্রিগোষ্ঠীকে ২৭ জুন পর্যন্ত চিকিৎসা পরিকাঠামোর বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। বর্তমানে দেশে ১০৩৯টি কোভিড নির্ধারিত হাসপাতাল রয়েছে যেখানে ১,৭৬,২৭৫টি আইসোলেশন বেড, ২২,৯৪০টি আইসিইউ বেড এবং ৭৭,২৬৮টি বেডে অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোভিড নির্ধারিত ২,৩৯৮টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১,৩৯,৪৮৩টি আইসোলেশন বেড, ১১,৫৩৯টি আইসিইউ বেড এবং ৫১,৩২১টি বেডে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৮,৯৫৮টি কোভিড কেয়ার সেন্টারে ৮,১০,৬২১টি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন্দ্র, ১,৮৫,১৮,০০০ এন৯৫ মাস্ক এবং ১,১৬,৭৪,০০০ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম, বিভিন্ন রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করছে।
আরও পড়ুন:আমেরিকা, ব্রাজিল ও রাশিয়ার ভ্রমণকারীদের ভিসা দেবে না ইইউ
দশম মন্ত্রিগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান শ্রী কে. শিবাজী জানান, কোভিড – ১৯ সংক্রান্ত বিভিন্ন জনঅভিযোগের নিষ্পত্তি ৬০ দিনের পরিবর্তে ৩ দিনে করা হচ্ছে। এর জন্য পয়লা এপ্রিল একটি ড্যাসবোর্ড তৈরি করা হয়েছিল। এই সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলিতে আসা ৭৭,৩০৭টি অভিযোগের মধ্যে ৯৩.৮৪ শতাংশ এবং রাজ্য সরকারগুলির বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছে আসা ৫৩,১৩০টি অভিযোগের মধ্যে ৬৩.১১ শতাংশ অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়েছে।
এই বৈঠকে অনলাইনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের আধিকারিকরা ছাড়াও অন্যান্য মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।