কৃষক আন্দোলন নিয়ে উদ্বিগ্ন UNO, চাপ বাড়াল ব্রিটেন

নিউইয়র্ক ও লন্ডন: ভুল তথ্যের ভিত্তিতে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা দিল্লির কৃষক আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করছেন। ভারত সরকারের এই মন্তব্যের পরেও থেমে নেই বিতর্ক। শনিবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের লেবার পার্টির ৩৬ জন সদস্য ব্রিটিশ বিদেশ সচিব ডমিনিক রাব–কে চিঠি লিখে দাবি করেছেন, পার্লামেন্টে এবিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে। এরই মাঝে আবার আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। আন্তর্জাতিক এই সংস্থা জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নামার অধিকার রয়েছে সাধারণ মানুষের। সরকারেরও উচিত আন্দোলন করতে দেওয়া।
কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে এখনও পর্যন্ত সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি। বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে তাই এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। সেই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্তোনিয়ো গুতারেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক জানিয়েছেন, ‘এই ধরনের বিষয় নিয়ে আগেও নিজেদের অবস্থান জানিয়েছি। ভারতের প্রসঙ্গেও একই কথা বলব। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার রয়েছে সাধারণ মানুষের। কর্তৃপক্ষের উচিত তা করতে দেওয়া।’ তবে, এর আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার রক্ষায় কানাডা সব সময় পাশে রয়েছে।’ তাঁর এই মন্তব্যকে ‘অসতর্ক’ এবং ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব। বিষয়টি নিয়ে ভারতে কানাডার হাইকমিশনারকেও তলব করা হয়। সেই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারী কৃষকদের সমর্থনে রাষ্ট্রপুঞ্জের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তবে শুধুমাত্র রাষ্ট্রপুঞ্জই নয়। ব্রিটেনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৩৬ জন এমপি বিদেশ সচিব ডোমিনিক রবকে চিঠি লিখে বলেছেন, ‘অবিলম্বে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠকে বসুন। তাঁকে বলুন, ভারতে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন হচ্ছে, তা নিয়ে ব্রিটেনের শিখরাও চিন্তিত।’ চিঠির খসড়ায় লেবার পার্টির সদস্য, তথা ভারতীয় বংশোদ্ভূত তন্মঞ্জিৎ সিং ধেসি লিখেছেন, ‘ব্রিটেনের সব শিখ এবং পঞ্জাবের সঙ্গে যাঁদের যোগ আছে সবার জন্য এটা উদ্বেগের বিষয়। সারা ভারতই এই আন্দোলনে সামিল। অনেক ব্রিটিশ শিখ এবং পঞ্জাবিরা তাঁদের এমপি–দের কাছে এব্যাপারে আলোচনা চেয়েছেন কারণ তাঁদের পরিজনরা এবং পঞ্জাবে তাঁদের পূর্বপুরুষদের জমি এতে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পঞ্জাবের তিন–চতুর্থাংশ কৃষিকাজে যুক্ত। তাই ভারতের নতুন কৃষি আইন পঞ্জাবিদের অত্যন্ত অসুবিধায় ফেলবে এবং এটি একটি মৃত্যু পরোয়ানা।’
তবে, ব্রিটিশ এমপিদের এই চিঠি লেখার আগেই গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার জানিয়েছিলেন, ‘কেন্দ্র কৃষকদের বিষয়গুলি নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেছে। কৃষকদের আরও আইনি অধিকার দেওয়ার কথা ভাববে সরকার। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য থাকবে। বৈঠকে উত্থাপিত বিষয়গুলি নিয়ে সরকার আলোচনা করবে এবং আশা করা হচ্ছে, পরবর্তী আলোচনায় চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে।’