যাদবপুরে শুরু হল ‘ভার্চুয়াল ক্লাস’, সমস্ত পড়ুয়ার অন্তর্ভুক্তিই লক্ষ্য JUTA’র, দীর্ঘ লড়াইয়ের ফল দাবি ABVP’র

স্বর্ণার্ক ঘোষ, কলকাতা: মহামারীর আবহে পড়ুয়াদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে না হয়ে তার জন্য দীর্ঘদিন অনলাইন মাধ্যমে ক্লাস করানোর দাবি করে আসছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা এবিভিপি। অবশেষে মিলল স্বস্তি। সম্প্রতি কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগে ডিজিটাল মাধ্যমে পঠন পাঠন শুরু করলো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত মার্চ মাসের শেষ দিক থেকেই শুরু হয় দেশব্যাপী লকডাউন প্রক্রিয়া। অন্যান্য ক্ষেত্রে মতোই বন্ধ হয়ে যায় একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এবং যার ফলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় পড়ুয়াদের। সেই সমস্যার কথা তুলে ধরে আন্দোলনের পথে নামে এবিভিপি। লকডাউন পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের পঠন পাঠনের কথা মাথায় রেখে চালু করতে হবে অনলাইন ক্লাস, প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও নজর দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। ভার্চুয়াল ক্লাস, ভার্চুয়াল ল্যাবরেটরির নির্মাণসহ ই-মেইলের মাধ্যমে ক্লাস নোট সরবরাহ প্রভৃতি দাবিতে সরব হয়েছিল বিদ্যার্থী পরিষদ।
এছাড়াও চলতি শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়াদের ফি মকুব, রাজ্য সরকারের স্কলারশিপ ফেলোশিপ নিয়মিত প্রদান সহ একাধিক দাবিতে গত জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এর দ্বারস্থ হয় বিদ্যার্থী পরিষদ এর সদস্যরা।
এই প্রসঙ্গে যুগশঙ্খ ডিজিটাল কে এক সাক্ষাৎকারে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি সভাপতি উৎসব চক্রবর্তী বলেন, “মহামারী পরিস্থিতিতে যাতে কোনও পড়ুয়ারা শিক্ষাগত দিক থেকে পিছিয়ে না পড়ে সেজন্যই আমরা এই দাবি করে এসেছিলাম।
কারণ পরিস্থিতি জটিল হলেও শিক্ষক অধ্যাপকরা আর্থিক দিক থেকে কোনও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন না। অথচ এই পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের। অবশেষে আন্দোলনের ফলে অনলাইন ক্লাস চালু হওয়ায় আমাদের দাবি স্বীকৃতি পেল। এটা আমাদের একটি বড় জয়”।
অন্যদিকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে পঠন-পাঠন চালু হওয়া প্রসঙ্গে যাদবপুর ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশনের জুটা’র সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম রায় যুগশঙ্খ ডিজিটালকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, “ভার্চুয়াল মাধ্যমে পঠন-পাঠন প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা পুরোদমে অনলাইন ক্লাস বলা যায় না। এখনও পর্যন্ত সাইন্স আর্টসের প্রতিটি বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে শুরু হয়েছে ডিজিটাল মাধ্যমে পঠন-পাঠন। মূলত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ইমেইল মারফত স্টাডি মেটেরিয়ালস আদান-প্রদান চলছে। প্রযুক্তিগত বিষয়টিকে মাথায় রেখে তাদের সমস্ত পড়ুয়ারা যাতে এই ডিজিটাল প্রক্রিয়ার আওতায় আসতে পারে সেই বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে”।
তিনি আরও বলেন “সায়েন্স এবং আর্টস এর ডিজিটাল মাধ্যমে ক্লাস চালু হলেও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে কিভাবে এই প্রক্রিয়ার আওতাভুক্ত করা যায় তা নিয়ে আগামী ১ সেপ্টেম্বর বৈঠকে বসতে চলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ”।
উল্লেখ্য, কলা বিভাগ এবং বিজ্ঞান বিভাগকে দিয়ে শুরু হয়েছে এই ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ক্লাস। তবে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এখনো ভর্তি না হওয়ায় আগামী দিনে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগেও এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হয় কিনা সেটাই দেখার।