পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ১০০ দিনের কাজের রুপরেখা তৈরি করছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন
শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল: করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় লকডাউনে বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাংলায় ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের সুযোগ করে দিতে ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করলো পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। দেশের অন্যান্য রাজ্য থেকে যে সব পরিযায়ী শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরে আসছেন, সেইসব শ্রমিকদের মধ্যে ইচ্ছুকদের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে নিযুক্ত করা হবে। তার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ৬২ টি পঞ্চায়েত এলাকায় সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি।
আসানসোল মহকুমাশাসক দেবজিৎ গাঙ্গুলি এইনিয়ে ইতিমধ্যেই আসানসোলের ৮ টি ব্লকের বিডিওদের নিয়ে একটি বৈঠকও করেছেন। আসানসোলে হওয়া সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জেলায় পঞ্চায়েত, মৎস্য, সেচ, বনসৃজন সহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের কাজের তালিকা তৈরি করা হবে।
সমীক্ষার পরে জবকার্ড তৈরি করে সেই কাজ দেওয়া হবে ওই সব পরিযায়ী শ্রমিকদের।
মহকুমাশাসক দেবজিৎ গাঙ্গুলি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে একটি রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে যে সব কাজ হয়ে থাকে, যেমন পুকুর ও খাল কাটা, বাঁধ মেরামতির পাশাপাশি বিভিন্ন দফতরের নতুন কাজের খোঁজ করা হচ্ছে। যাতে আরও বেশি এইসব মানুষদের জাতীয় গ্রামীণ কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পে কাজ দেওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, সব কাজ এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সেইসব কাজগুলোকে খুঁজে বার করা হবে। গ্রামে কর্মসংস্থান বাড়াতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও কাজে লাগানো হবে। লকডাউনের মধ্যেই গত ২০ এপ্রিল থেকে এই রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই সেই কাজের প্রথম কিস্তির টাকা হাতে সবাই পেয়ে গেছেন।
লকডাউন ঘোষণার আগে ও পরে যারা ভিন রাজ্য থেকে ফিরে এসেছেন তাদের অনেকেই এখন এখানে ১০০ দিনের কাজে যোগ দিতে চাইছেন। এই প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক, বলেন তাদেরকে জবকার্ড দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মহাত্মা গান্ধী জাতীয় কর্ম সুনিশ্চয়তা প্রকল্পে সব থেকে বেশি সফলতা এসেছে মিলিনায়ম ড্রিম প্রোজেক্টে। এই প্রকল্পেই রোজগার বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এই জেলার ৮ টি ব্লকে ৬২টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে একসঙ্গে করে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০ লক্ষের বেশি শ্রমদিবস বেড়েছে। মোট ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই প্রকল্পে কাজ হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ লক্ষ ৬০০ দিন কর্মদিবস সুনিশ্চিত হয়েছে। গত আর্থিক বছরের শুরুতে ২৩ কোটি কর্ম দিবস তৈরির লক্ষ্য থাকলেও, তা এবার বাড়িয়ে ২৬ কোটি করা হয়েছে।