পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র কোথায়! এখানে তো পুলিশ থেকে সাংবাদিক সবাইকে ভয় দেখানো হচ্ছে: রাজু ব্যানার্জি

কৃষ্ণা দাস, শিলিগুড়ি: বিজেপি’কে আটকাতে করোনাকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবাংলায় ইমারজেন্সি লাগু করেছে। যাতে সাধারণ, গরিব মানুষের কাছে গিয়ে তাদের দুঃখ-দুর্দশা বিজেপি শুনতে না পারে। কোচবিহারে দলীয় কর্মসূচীতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে লকডাউনের জেড়ে শিলিগুড়িতে আটকে গিয়ে এভাবেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিজেপি’র রাজ্য সহ সভাপতি রাজু ব্যানার্জি।
করোনা ভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের জেড়ে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার সহ উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জেলায় ফের লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। সেইমত বুধবার থেকে শিলিগুড়িতে সম্পূর্ণ লকডাউন চলছে।
বৃহস্পতিবার কোচবিহারে আক্রান্ত দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে শিলিগুড়িতেই আটকে পরে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজু ব্যানার্জি বলেন, গত ৪০/৪৫ দিন ধরে রাজ্য সরকার ঘুমাচ্ছিল নাকি? করোনা তো অনেক আগে থেকেই ছড়াচ্ছে। এতদিন কি রাজ্য সরকার ঘুমোচ্ছিল? তার অভিযোগ পুলিশ প্রশাসন তাকে বের হতে দিতে রাজি নয়।
আরও পড়ুন:‘আমরা দিল্লি অবধি চমকাতে পারি’: দিলীপ ঘোষ
পুলিশ হুমকি দিচ্ছে কোচবিহারে এলেই গ্রেফতার করা হবে তাকে। তবে তার বক্তব্য তিনি গ্রেফতার হতে রাজি। কিন্তু তার ভয় যদি তৃণমূল অপপ্রচার চালায় যে বিজেপি এসে করোনা ছড়াচ্ছে, তাই বের হচ্ছেন না তিনি। তার আরও অভিযোগ, সম্প্রতি কোচবিহারের কিছু জায়গায় তৃণমূলের গুন্ডা, হার্মাদরা বিজেপি কর্মীদের বাড়িঘর লুটপাট চালিয়েছে, মিথ্যে মামলায় পুলিশ ফাঁসিয়েছে। পাশাপাশি বিজেপির ডাকা ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধকে কেন্দ্র করে বিজেপির কয়েকজন কর্মীকে হাজতে আটকে রেখেছে পুলিশ। তাদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল তার। তিনি অভিযোগ করে বলেন, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের পুলিশ প্রশাসন আমাকে ঢুকতে দিতেই রাজি না। রাজ্যে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই।
বিজেপি’র সাংসদ, রাজ্য সভাপতি, সাধারণ নেতা কর্মীদের জায়গায় জায়গায় আটকে দিচ্ছে। আমরা কোথায় যাচ্ছিলাম! যেখানে তৃণমূল মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, তৃণমূলের গুন্ডা, হার্মাদরা বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, লুঠে নিয়েছে, মা বোনেদের ইজ্জত হনন করেছে সেখানেই আমরা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে যাচ্ছিলাম। সেখানেই পুলিশ প্রশাসন বলছে বেরোলেই গ্রেফতার করা হবে।
সম্প্রতি বনধকে কেন্দ্র করে জলপাইগুড়ির পুলিশের আইসি বিক্ষোকারীদের গ্রেফতার করে থানায় মাংস, ভাত খাওয়ান। এরপরই তার বদলি হয়ে যায়।
সেই প্রসঙ্গে, রাজু বাবুর বক্তব্য, এটা একটা বার্তা! সম্প্রতি দেবেন্দ্রবাবু খুন হলেন, সেটার কারণ হল, তৃণমূলের যারা আমাদের দলে আসবে ভাবছিল তাদেরকে দেবেনদাকে খুন করে বার্তা দেওয়া হল। ঠিক একইভাবে থানায় যখনই খাওয়াল তখনই বদলি করে দিল। তার মানে যারাই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে তাদের বদলি হয়ে যাবে। আর তাতেই বোঝা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র কোথায়! এখানে তো পুলিশকে ভয় দেখানো হচ্ছে, সাধারণ মানুষদের ভয় দেখানো হচ্ছে, বিরোধীদের ভয় দেখানো হচ্ছে, সাংবাদিকদেরও ভয় দেখানো হচ্ছে! পশ্চিমবঙ্গে সুপার এমারজেন্সি চলছে। মমতা ব্যানার্জির এমারজেন্সি।