শরণানন্দ দাস, কলকাতা: প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে বুধবার সকালে আক্রান্ত হলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সম্প্রতি দিলীপ ঘোষ ঠিকানা বদল করেছেন। নিউটাউনের জোতভীম এলাকায় নতুন একটি আবাসনে উঠে এসেছেন। আবাসনের পিছনেই আঠেরতলা বাজারে একটি চা চক্রের আয়োজন করা হয়। সেখানে দিলীপ ঘোষ পৌঁছনোর পরেই গোলমাল শুরু। বচসা, ধস্তাধস্তি, যায় গাড়ি ভাঙচুর পর্যন্ত হলো। দেহরক্ষীদের ঘেরাটোপে থাকায় সাংসদের কোন আঘাত লাগেনি। আর এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমাকে তৃণমূলের এতো ভয় কেন বুঝতে পারছি না।’ এই ঘটনার খবর পেয়ে খোঁজ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, ‘ অমিতজি ফোন করেছিলেন। আমি বললাম, চিন্তা করবেন না, এখানে রোজই এমন হয়ে থাকে।’ এই ঘটনার নিন্দা করে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা।
এদিন নিজের বাসভবনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘ আমি এই নতুন ঠিকানায় আসার পর থেকেই বাড়ির মালিককে হয়রানি করতে শুরু করেছে প্রশাসন। এনকেডিএ বাড়ির গায়ে নোটিশ লাগিয়েছে বেআইনি নির্মাণ বলে। হিডকো, পুলিশ সবাই হেনস্থা করছে, মঙ্গলবার বাড়ির মালিককে লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। অথচ তিনবছর আগে থেকে এই আবাসনে মানুষজন থাকছেন। কিছুদিন আগে এই আবাসনে একজন জৈন মুনি একমাস ছিলেন। আমি আসার পর থেকে হয়তো অনেকের শরীর খারাপ হতে শুরু করেছে। আজকে আমার চা চক্রে বাধা দেওয়া হলো। আমাকে তৃণমূলের এতো ভয় কেন বুঝতে পারছি না। আমারতো সন্দেহ হচ্ছে, ভারতে আছি না বাংলাদেশে।’
ঠিক কি হয়েছিল?
মেদিনীপুরের সাংসদের বক্তব্য, ‘ কোচপুকুর বাজারে গিয়েছিলাম, ছোট্ট চা চক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। আমি যেতেই হুমকি দেওয়া শুরু হলো। আমাদের কর্মীদের সঙ্গে এখানকার মেয়রের ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের গুণ্ডারা মারপিট শুরু করে দিল। আমাকে বলল এখানে চা খাওয়া যাবে না। সোশ্যাল ডিসট্যান্স মানা হচ্ছে না। আমি দেখলাম ওরা কেউ মাস্ক পরে নি। আমি বলাতে মাস্ক পরে এলো। আমি বললাম, চা খাওয়ায় জন্য পারমিশান নিতে হবে নাকি? আমি চলে আসার পর আমাদের বেশ কিছু কর্মীকে মারধর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেসরকারি বাস রাস্তায় না নামানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হাইকোর্টে
দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে আমাদের একজন পুরনো কর্মীকে খুব মারধর করা হয়েছে। বেশ কিছু গাড়ি ভেঙেছে ওরা। আমার সচিব বিষয়টা পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছেন’। প্রসঙ্গত স্থানীয় নেতৃত্ব মহসিন গাজিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে লেদার কমপ্লেক্স থানাতেও এফআইআর করেছেন। মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘ আমি আবার বাজারে যাবো, আবার চা খাবো। আজ নিছকই চা খেতে বেরিয়েছিলাম। এবার তৈরি হয়ে বেরোব। চায়ের তাপ যেমন হবে আমাদের তাপ উত্তাপও তেমন হবে। বিজেপি এখন আক্রমণ হলে প্রতিহত করতে জানে।’
এদিকে এই ঘটনার নিন্দা করে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, ‘ রাজ্যে যে আইনের শাসন নেই সেটা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। কলকাতার বুকে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে রাজ্যের অন্যাত্র কি অবস্থা সহজেই অনুমেয়। আমি এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।