fbpx
অন্যান্যঅফবিটহেডলাইন

বিশ্ব কুইজিন…

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: বাঁচার জন্য খাওয়া নাকি খাওয়ার জন্য বাঁচা–এ ভাবনার কোনও মিমাংসা নেই। তবে যার জন্যই যা হোক না কেন, রসনা তৃপ্তিতে তৎপর হই আমরা সবাই। আলুসেদ্ধ ভাত পরম তৃপ্তি দিলেও, মাঝে মাঝে আমাদের স্বাদকোরকগুলি একটু বদল চায়। আর সেই বদল অবশ্যই সাধ এবং সাধ্যের মধ্যে রেখেই আমরা করতে চাই। কেউ কেউ আবার সারা পৃথিবীর কড়াই খুন্তির লড়াইকেই চেখে দেখতে চান। সেই কথা মাথায় রেখেই যুগশঙ্খ ডিজিটালে বিশ্ব কুইজিন । আজ পাঁচমেশালি ।

পাঁমেশালিতে আজ এমন এক পদ যা অতি প্রাচীন। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এর প্রচলন ছিল। আজও আছে। এই পদের প্রায় অষ্টোত্তর শতনাম। পালাতা, ফারাটা, পারান্থা, পারোন্তে। বুঝতে পারলেন না তো? আচ্ছা বেশ। বাংলা নামটা বলছি। পরোটা। অঙ্ক না পারলে যেমন ‘মাথায় গোবর পড়া’শিরোপা জুটতো, তেমনই রুটি বা পরোটা বেলতে গিয়ে তা কোনও না কোনও দেশের ম্যাপ হবেই হবে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালে এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা। মাঝে মাঝেই ধুমায়িত চায়ের সঙ্গে তুফান ওঠে লুচি না পরোটা? দু’টিরই উপকরণ এক, বানানোর পদ্ধতিও প্রায় এক। কথায় যদিও আগে লুচির অবস্থান। সে যাই হোক। পরোটা এমন একটি পদ যা আমিষ থেকে নিরামিষ সকল মানুষেরই মন পসন্দ। আলুর ছেঁচকি থেকে রেশমি কাবাব – সবেতেই উত্তম সঙ্গী পরোটা। ইতিহাস বলছে পরোটা একান্তভাবেই আর্য রন্ধনশালা থেকে আগত। সমার্থক শব্দকোষ ঘাটলে

আরও পড়ুনঃ বিশ্ব কুইজিন

‘পুরোডাশ’, ‘পূপলা’, ‘পূপিকা’, ‘পুরিকা’, ‘পৌলি’ ইত্যাদি শব্দ পরোটার সমার্থক শব্দ হিসাবে পাওয়া যায়। সবগুলি শব্দই তৎসম। ব্যকরণের কচকচি বাদ দিয়ে এবার বলি যাযাবর পরোটার দুটি পদ। ভ্রুকুঞ্চিত করলেন? আরে বাবা আসমুদ্র-হিমাচল যেখানেই যান, আপনি পাবেন পরোটার নানা জ্ঞাতিকে। শুধু নামে, দর্শনে আর স্বাদে সে নিজেকে পাল্টেছে। তাই আটা বা ময়দা আর জল – এতেই আটকে নেই পরোটা। খাদ্যরসিক বাঙালি শুধু আলু নয়, পরোটা বানাচ্ছে অনেক কিছু দিয়ে। রইল তেমনই দু’টি রেসিপি।

টমেটো পরোটা

নামেই বলে দিচ্ছে এই রেসিপিতে টমেটো লাগবেই। এছাড়া আটা বা ময়দা, রসুন, আদা, গোটা জিরে, লঙ্কা, ধনেপাতা কুচো, নুন, ঘি বা তেল এসবও হাতের কাছে জোগাড় করে নিন। এবার বেশ কটি টমেটো নিন। টমেটোর সাইজ বুঝে নেবেন। মাঝারি সাইজের হলে ৪-৫টি নিলেই হবে। এবার ভালো করে ধুয়ে কেটে নিতে পারেন কিংবা গ্রেট করে নিতে পারেন। এরপর একটি মিক্সার জারে ওই কাটা টমেটো নিয়ে তাতে আদা কুচি, ৪-৫টি রসুন কোয়া, লঙ্কা, অল্প গোটা জিরে এবং স্বাদ মতো নুন দিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার ওই পেস্ট একটা বাটিতে ঢেলে ওতে অল্প অল্প করে আটা বা ময়দা মিশিয়ে মেখে নিন। কোনও জল দেবেন না। টমেটোর মধ্যেই জল আছে। ভালো করে মেখে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন।

এরপর পরোটা যেমন করে বেলেন তেমন করে বেলে নিন। লো ফ্লেমে তাওয়ায় সেঁকুন। দু’দিক স্যাঁকা হলে অল্প ঘি বা তেল দিয়ে ভাজুন। ঝাল, টক, রসুনের গন্ধে এবং টমেটোর লাল আভায় এই পরোটা দেখতে ও খেতে খুবই ভালো লাগে। শুধু শুধু খেতেই পারেন, তবে কোনও আচার বা রায়তা সহযোগে খেলে তার মজাই আলাদা।

ডিম পরোটা

নামটা শুনেই মোগলাইয়ের কথা মনে পড়ছে তাই তো? না, এ পরোটা মোগলাইয়ের ধারে কাছ দিয়েও যায় না। বরং একে ডিমের গোলা পরোটা বলতে পারেন। এই পরোটায় আপনাকে আটা বা ময়দা মাখতে হবে না। বেলার ঝামেলাও নেই। অনেক সহজে এবং তাড়াতাড়ি এই পরোটা তৈরি হয়ে যায়। ডিম, আটা বা ময়দা, দুধ, টমেটো কুচি, লঙ্কাকুচি, স্বাদ মতো নুন এবং ভাজার জন্য অল্প তেল। ব্যাস এইটুকু উপকরণেই তৈরি হয়ে যাবে এই ডিম পরোটা। প্রথমে ২/৩ টে ডিম, টমেটোকুচি, লঙ্কাকুচি ও নুন দিয়ে ফেটিয়ে নিন। তারপর এক কাপ দুধ ওই

ফেটানো ডিমের মধ্যে দিয়ে দিন। ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার দিন এক কাপ ময়দা। যে কাপ দিয়ে দুধ নিয়েছেন সেই কাপেরই এক কাপ ময়দা নিতে হবে। এবার ভালো করে মিশিয়ে একটা ঘন তরল তৈরি করুন। গ্যাসে প্যান গরম করে তাতে এক টি-স্পুন তেল দিন। তারপর একটি গোল হাতায় ওই ঘন তরল বা ব্যাটার তুলে ওই প্যানে দিন। ভালো করে ভাজুন। একপিঠ ভাজা হলে উলটে দিয়ে ভেজে নিন। মনে রাখবেন গ্যাসের ফ্লেম লো রাখবেন। তাহলে পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না আর দু’দিকই খুব সুন্দর ভাজা হবে। টমেটো সস বা আমের ঝাল আঁচার দিয়ে এই পরোটা খেতে ভালোই লাগে।

Related Articles

Back to top button
Close